কুয়েত থেকে: সূর্য ওঠার আগেই কাজে নেমে পড়েছেন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মো. শাহজাহান (৪৫)। মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ কুয়েতে ভোর না হতেই মাংস আর মাংসের কিমা সরবরাহ করার কাজটিই করেন শাহজাহান।
ভোরে তাকে দেখা গেলে শহরের প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত কুয়েত সিটির মিরগাবের একটি রাস্তায়। আব্দুল আজিজ ইসারা আল সোয়াদা সড়কের পাশের একটি কিমা তৈরির দোকানের সামনে থরে থরে সাজানো ট্রে। সেই দোকানে দুম্বার মাংস থেকে তৈরি হওয়া কিমা তুলছেন একটি বিশেষায়িত মাইক্রোবাসে। যাকে বলে ডেলিভারি ভ্যান।
কাজের ফাঁকেই বাংলানিউজের সাথে কথা হয় শাহজাহানের।
তিনি জানান,১৯৮৬ সালে অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশ থেকে এসেছিলেন এই দেশে। মাঝে উপসাগরীয় যুদ্ধ সেই স্বপ্নকে লণ্ডভণ্ড করে দিলে ফিরে যেতে হয় দেশে। যুদ্ধ শেষে ফিরে আবার গড়ে তুলেছেন নিজের ভাগ্য।
বর্তমানে কাজ করছেন আল সেরা মিট কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানটির কাজই হচ্ছে মুরগি কিংবা দুম্বার মাংস প্রক্রিয়া করে তা বিভিন্ন সুপার শপে সরবরাহ করা।
‘সূর্য ওঠার আগেই ভোর সারে চারটায় উঠে কাজে চলে আসি। শিল্প এলাকা সোয়েট থেকে দুম্বার মাংস এখানে আনার পর তা কিমা করা হয়। সেই কিমা পৌঁছে দেবার দায়িত্ব শহরের ছয়টি বড় সুপার শপে। এভাবে ভোর থেকে দুপুর একটা কি বড়জোর দেড়টা। তার পর ছুটি। তবে প্রয়োজনে নিয়োগকর্তা ডাকলে আসতে হয়’।
শাহজাহানের পদবীর নাম ‘মন্দুপ’ মানে তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তা। বেতন ২১০ দিনার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫০ হাজার টাকার কিছু বেশি। নিজের খরচ বাঁচিয়ে দেশে মাসে ৩০/৩৫ হাজার টাকা পাঠাতে পারেন। সন্তানদের একজনও প্রবাসী। বড় ছেলে দুবাইতে। ছোট ছেলে পড়ছে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে আর সবার ছোট মেয়েটি পড়ছে ক্লাস নাইনে। কুয়েতে ভালো আছি। কোন সমস্যা নেই। দোয়া করবেন। বাংলানিউজের মাধ্যমে আমার দেশের মানুষকে জানাই শুভেচ্ছা- বলেই দুম্বার মাংসের কিমা নিয়ে শহরে ছুটে বেড়ানোর কাজে নেমে পড়েন এই প্রবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৫
আরআই
** ধূসর মরুভূমিতে সবুজ স্বপ্ন!
** ফেসবুক বন্ধ, খুললো জুতা!
** লেট বিমান!