মুরগাব (কুয়েত) থেকে: কুয়েত থেকে দেশে প্রিয় স্বজনদের কাছে মালামাল পাঠাতে গিয়ে চরম হয়রানি ও নাজেহালের শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। এ নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের।
আইনের দোহাই দিয়ে পদে পদে প্রবাসীদের হয়রানি করায় ফুঁসে উঠছে ভূক্তভোগীরা। আর এসব কারণে এখানে বন্ধের উপক্রম হয়েছে প্রবাসীদের সেবায় নিয়োজিত বেশ কিছু কার্গো প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ রয়েছে, কাস্টমসের এক শ্রেণির কর্মকর্তা বিমান বন্দরে উৎকোচ দাবি, না পেয়ে মাত্রাতিরিক্ত হয়রানি ও জরিমানাও করছে প্রবাসীদের। দূতাবাস, মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ধর্ণা দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না প্রবাসীরা।
স্থানীয় কার্গো ব্যবসায়ীরা বলেছেন, কুয়েতে থাকা প্রবাসীরা ব্যাগেজ রুলের আওতায় প্রিয় স্বজনদের জন্যে মালামাল পাঠালেও খোদ প্রেরণকারী ছাড়া ওই মাল উত্তোলনের সুযোগ নেই প্রেরকের স্বজনদের।
অথচ বিশ্বের কোথাও এমন আইনের নজির নেই বলে জানিয়েছেন প্রবাসীরা।
মুরগাবের কার্গো ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, অনেক প্রবাসী আছেন, যারা বছরে কিংবা দুই বছরেও দেশে যাবার সুযোগ পান না। অথচ তিনি প্রিয়জনদের জন্যে সাবান, শ্যাম্পু, খেলনা, দুধ, কাপড়সহ নিত্য ব্যবহার্য পণ্য কার্গোতে বুকিং করে পাঠালেও আইন অনুযায়ী তা গ্রহণ করার সুযোগ নেই প্রেরকের স্বজনদের।
বিষয়টিকে হয়রানিমূলক আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা পরিবর্তনের দাবি করছেন প্রবাসীরা। বিষয়টিকে অমানবিক উল্লেখ করে প্রবাসী মিজান আল রহমান বাংলানিউজকে জানান, এটা প্রবাসীদের প্রতি চরম অবহেলা ও অবমাননাকর।
এখানেই শেষ নয়। আইন অনুযায়ী একজন প্রবাসী ব্যাগেজ রুল কার্গোতে সর্বোচ্চ ২৯৯ কেজি মাল দেশে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রবাসী নিজেই বিমানবন্দরে কাস্টমসসে গেলে সেখানে পণ্যে ঘোষণা দেবার সময় অর্থ দাবি করা হয়। না দিলে বেআইনিভাবে জরিমানা করা হয় বলেও অভিযোগ এখানকার প্রবাসীদের।
কুয়েত প্রবাসী ফাহাহিল এলাকার রেদোয়ান কার্গোর মালিক আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘ যাত্রা শেষে প্রবাসীরা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করার সময় ৫ মিনিটের কাজ করতে বসিয়ে রাখা হয় তিন থেকে ৫ ঘণ্টা। আবার যাত্রা বিলম্বের কারণে এক সপ্তাহের মধ্যে ডিক্লেয়ারেশন না করাতে পেরেও হয়রানির শিকার হন প্রবাসীরা।
এ ক্ষেত্রে কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তা ঘোষণাপত্রে বিলম্বে স্বাক্ষর করায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে প্রবাসীদের। এ অবস্থায় প্রবাসীদের মূল্যবান নিত্য ব্যবহার্য মালামাল থেকে স্বজনরা যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন,তেমনি প্রবাসীরাও ভোগ করছেন সীমাহীন দুর্ভোগ।
এ ছাড়াও কাস্টমস হাউজে পণ্যের শুল্ক নিরুপণের সময় হয়রানি ও উৎকোচ দাবি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে বলেও অভিযোগ প্রবাসীদের।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী প্রবাসীদের এই দুর্ভোগ নিরসনের দাবি জানিয়ে কার্গো ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৫
জেডআর/এসএইচ
** অলিদের বঞ্চনা দেখার কেউ নেই
** শিল্প-সাহিত্যেও পিছিয়ে নেই প্রবাসীরা
** বাংলাদেশিদের কাজের ঠিকানা সুলাইবিয়ার ফল-সবজির বাজারও
** পরিবর্তনের দূত মেজর জেনারেল আসহাব উদ্দিন
** কুয়েতে মানবতার ফেরিওয়ালারা!
** সততা আর নিষ্ঠা থাকলে ঠেকায় কে?
** মরুর বুকে বুকভরা নিঃশ্বাস
** শ্রমিকদের মাথার মুকুট আব্দুর রাজ্জাক
** আরব সাগর থেকে হিমেল বাতাসে ভর করে এলো ছন্দ
** মরুর কুয়েত সবুজ চাদরে ঢাকছেন নাফিস জাহান
** ফেব্রুয়ারিতেই খুলনার মারুফের জীবনে আসছে পূর্ণতা!
** কুয়েতে গুলশান!
** কুয়েতের অ্যাম্বাসেডর!
** জন্ম কুয়েতে, হৃদয় বাংলাদেশের
** সূর্য ওঠার আগেই ঘুম ভাঙে চট্টগ্রামের শাহজাহানের
** ধূসর মরুভূমিতে সবুজ স্বপ্ন!
** ফেসবুক বন্ধ, খুললো জুতা!
** লেট বিমান!