ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

চার শতাধিক অভিযোগের দুদকের নথি দেখতে চাইলেন হাইকোর্ট 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৩
চার শতাধিক অভিযোগের দুদকের নথি দেখতে চাইলেন হাইকোর্ট 

ঢাকা: সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অবসরে যাওয়ার পাঁচ মাস আগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) যেসব অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং যেসব অভিযোগ ‘পরিসমাপ্তি’ ঘোষণা করা হয়েছে, সেসব অভিযোগের রেকর্ড (নথি) চেয়েছেন হাইকোর্ট।  

এ বিষয়ে দুদকের দাখিল করা প্রতিবেদন দেখার পর রোববার (২২ জানুয়ারি বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ মামলায় আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে এসব নথি দাখিল করতে বলা হয়েছে।  

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর সাংবাদিক সাঈদ আহমেদ খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।  


দুদকে ‘অনুসন্ধান বাণিজ্য’ শিরোনামে ২০২১ সালের ১৪ মার্চ প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি দৈনিক। প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আসার পর একই বছরের ১৬ মার্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।  

আদেশে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অবসরে যাওয়ার আগের পাঁচ মাস (২০২০ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ১০ মার্চ পরর্যন্ত) দুদকের অনুসন্ধান থেকে কত জনকে, কেন অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে প্রতিবেদন চাওয়া হয় আদেশে। সেই সঙ্গে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবেদক সাঈদ আহমেদ খানকে এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

সে অনুযায়ী দুদকের প্রতিবেদন রোববার উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হলে অভিযোগটি ‘পরিসমাপ্ত’ করা হয়। এটি কমিশনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, কমিশন বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত অভিযোগসমূহ যাচাই-বাছাই করে অনুসন্ধানের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করে। ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত পাঁচ মাসে পূর্বের জেরসহ মোট ৪ হাজার ৪৮১টি অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন ছিলো।  

নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরনপূর্বক কমিশন এই সময়ে অর্থাৎ উক্ত পাঁচ মাসে ১৫৪টি অভিযোগের বিপরীতে মামলা দায়েরের ও সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের অভাবে ৪০৮টি অভিযোগ পরাসমাপ্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২টি অভিযোগ অন্যান্যভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। একই সময়ে গত বছরের ১০ মার্চ পর্যন্ত পূর্বের জেরসহ মোট ১ হাজার ৫৭৮টি মামলা তদন্তাধীন ছিল। এর মধ্যে ৫৭টি মামলার এফআরটি (চূড়ান্ত প্রতিবেদন) দাখিল ও ১৬৫টি মামলার চার্জশিট দাখিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ৬টি মামলা অন্যান্যভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। কমিশনের সব সিদ্ধান্তই সর্বসম্মতিক্রমে বা সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়। এককভাবে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ নেই।  

পরে আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান, আমাদের দাখিল করা প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আদালত বলেছেন যে, যে অভিযোগুলো পরিসমাপ্ত (অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে) ঘোষণা করা হয়েছে, সেই পরিসমাপ্ত অভিযোগগুলোর রেকর্ডগুলো দেখেতে চেয়েছেন আদালত। তদন্ত ও পরিসমাপ্ত মিলিয়ে মোট ৪৭৩টি অভিযোগের রেকর্ড আদালত দেখতে চেয়েছেন।   

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অবসরে যাওয়ার আগের পাঁচ মাসে ৪ হাজার ৪৮১টি অভিযোগ থেকে চার শতাধিক অভিযোগ পরিসমাপ্ত ঘোষণা করেছে দুদক। পরিসমাপ্তি বা অব্যাহতির একটা আইনি পদ্ধতি আছে। এসব পরিসমাপ্তির ক্ষেত্রে সে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে কিনা আদালত মূলত সেটি দেখতে চেয়েছেন। আর যেসব অভিযোগে মামলা হয়েছে সেসব মামলার অগ্রগতি অর্থাৎ কোনটা কী পর্যায়ে আছে সেটিও দেখতে চেয়েছেন আদালত। যে কারণে এ সংক্রান্ত সমস্ত নথি দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৩
ইএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।