ঢাকা: কুমিল্লার লালমাই পাহাড় কাটা বিরত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে বেলা’র পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস হাসানুল বান্না।
পরে বেলার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি), হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড ও হক এন্টারপ্রাইজ জয়েন্ট ভেঞ্চার (জেভি) এবং ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ককে মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কুমিল্লার লালমাই পাহাড় কাটা ও অন্যান্য পাহাড় ধ্বংসমূলক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়), কুমিল্লার উপ-পরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, কুবি, হাসান টেকনো বিল্ডার্স ও হক এন্টারপ্রাইজ জয়েন্ট ভেঞ্চার (জেভি) এবং ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের ফলে ইতোমধ্যে লালমাই পাহাড়ের প্রতিবেশ ব্যবস্থা, উদ্ভিদ, প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা নিরূপণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি বিবাদীদেরকে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রুলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, কুবি, হাসান টেকনো বিল্ডার্স ও হক জেভির এবং ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের নির্বিচারে লালমাই পাহাড় কাটা থেকে রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইন বহির্ভূত ও জনস্বার্থ পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে পুনরুদ্ধার ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে পুনরুদ্ধার এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ধারা-৫ (প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা), প্রত্নতাত্ত্বিক আইন, ১৯৬৮ এর ধারা-১০ (প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন), বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এর ধারা-২২ (বিশেষ জীববৈচিত্র্য এলাকা) এবং জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭ এর ধারা-৩২ (জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ঐতিহ্যগত স্থান) এর অধীন বিশেষ সংরক্ষণের আওতায় এনে তা সংরক্ষণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি লালমাই পাহাড়, পাহাড়ের প্রতিবেশ ব্যবস্থা ও উদ্ভিদ-প্রাণী ধ্বংস করায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, হাসান টেকনো বিল্ডার্স ও হক জেভি এবং ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
বেলার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য ১৩১.০২৭৮ একর পাহাড়ি ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়। যা ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয়।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) কর্তৃপক্ষকে পাহাড় কাটা বন্ধে নোটিশ দেয়। তবুও চলছে পাহাড় কাটা। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই মৌজায় অবস্থিত প্রত্নসম্পদে ভরপুর লালমাই পাহাড় অধিগ্রহণ ও পাহাড়ের জমিতে কুবি সম্প্রসারণ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধের দাবিতে জনস্বার্থমূলক মামলাটি দায়ের করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
ইএস/এএটি