ঢাকা, সোমবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ গোলাপ

ঢাকা: আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) নামে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের করা রিট নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ বিষয়ে চার মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। আদালত বলেছেন, অনুসন্ধান শেষে অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে দুদক রিট আবেদনকারীকে অবহিত করবে। দুদক চাইলে নির্বাচন কমিশনসহ সব বিবাদীরা অনুসন্ধান কাজে সংস্থাটিকে সহযোগিতা করবে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। । দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানি করেন।

এর আগে রোববার এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

রিট আবেদনে ২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুস সোবহান মিয়ার নামে অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালে নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক বাড়ি কেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুস সোবহান মিয়ার নামে অনুসন্ধান করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে একাধিক বাড়ি কিনেছেন। বিষয়টি নির্বাচনী হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেননি। এ তথ্য অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি তাদের ওয়েবসাইটে করা একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।

ওসিসিআরপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মো. আবদুস সোবহান মিয়া ২০১৪ সালে প্রথম নিউইয়র্কে অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন। ওই বছর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় একটি সুউচ্চ ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন তিনি। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউইয়র্কে একে একে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক হন। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)।

ওসিসিআরপির করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে পাঁচটি কনডোমিনিয়াম কিনেছিলেন আবদুস সোবহান। সে সময় ওই সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ২৪ লাখ ডলার। এ ছাড়া আশপাশের ভবনগুলোতে ৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার মূল্যের তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন তিনি। নিউইয়র্কে কেনা এসব সম্পত্তির নথিপত্র বলছে, সম্পত্তিগুলো নগদ অর্থে কেনা হয়েছিল। এগুলোর মালিকানায় রয়েছেন তার স্ত্রী গুলশান আরাও।

ওসিসিআরপির করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আবদুস সোবহান নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে আরও একটি সম্পত্তি (বাড়ি) কিনেছিলেন। ওই সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ১২ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন। এর সাত মাস আগে বাংলাদেশে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
ইএস/জেডএ

আগের সংবাদ-
যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানে সুমনের রিট

ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে এমপি গোলাপের মামলা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।