কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় তরলদাহ্য ছুড়ে এক অন্তঃসত্ত্বাকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে রোকনুজ্জামান ওরফে রনি (৩৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেলে কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেন আদালত। এ সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত রোকনুজ্জামান ওরফে রনি কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টায় ভাড়াটিয়া অন্তঃসত্ত্বা জুলেখা খাতুন (৩৫) বাড়ির মালিকের স্ত্রী হামিদা খাতুনের সঙ্গে তার দোতলায় বসে গল্প করছিলেন। এ সময় ইন্টারনেট সংযোগের পাসওয়ার্ড দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে বাড়ির মালিকের ছেলে রোকনুজ্জামান পেট্রোল-তারপিনসহ অতিদাহ্য মিশ্রিত তরল ছুড়ে গ্যাস লাইটের আগুন ধরিয়ে দেন গৃহবধূ জুলেখার দেহে। এতে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।
দগ্ধ জুলেখাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন জুলেখার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মিরপুর উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের বাসিন্দা পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান রোকনুজ্জামান রনির বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ এনে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩ জুন কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক জাবিদ হাসান রোকনুজ্জামানকে একমাত্র আসামি করে একসঙ্গে দুটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাড. আব্দুল হালিম জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত মামলার একমাত্র আসামি রনির মৃত্যুদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৩
এনএস