ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

১৩ বছরে ট্রাইব্যুনাল ৫১ রায়ে কার্যকর ছয় ফাঁসি 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
১৩ বছরে ট্রাইব্যুনাল ৫১ রায়ে কার্যকর ছয় ফাঁসি 

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৩ বছরের ৫১ টি মামলার রায় দিয়েছেন।  

এই ৫১ টি রায়ের মধ্যে চূড়ান্ত আপিল শুনানি শেষে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে ছয় আসামির।

আর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ডের দুই আসামির রায় পুর্নবিবেচনার আবেদন বিচারাধীন রয়েছে।  

এছাড়া ৫১ মামলায় খালাস পেয়েছেন মাত্র দুই জন আসামি।

এসব মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১৫১ জন। এদের মধ্যে ১৩১ জন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। রায় হওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১৮ জন। আর পলাতক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আরও দুই জন।

মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ এ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল। এরপর ২০১২ সালের ২২ মার্চ আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ১১টি মামলার রায় দেওয়ার পর ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনাল-২ কে একীভূত করা হয়। এখন একটি ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

এ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর প্রথম রায় আসে তিন বছর পর ২০১৩ সালে। ওই বছরের ২১ জানুয়ারি প্রথম রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আজাদ ওরফে ‘বাচ্চু রাজাকার’কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর একে একে শীর্ষ মানবতাবিরোধীর অপরাধীর রায় হয় ট্রাইব্যুনালে।

২০১৩ সালের পর প্রত্যেক বছর একাধিক রায় হলেও করোনার বছর ২০২০ সালে কোনো রায় হয়নি।

২০১৩ সালে মোট ৯টি রায় ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৪ সালে ৬টি, ২০১৫ সালে ৬টি, ২০১৬ সালে ৬টি, ২০১৭ সালে ২টি, ২০১৮ সালে ৬টি, ২০১৯ সালের ৬টি, ২০২১ সালে ২টি, ২০২২ সালে ৬টি ও ২০২৩ সালের (২৩ মার্চ পর্যন্ত) ২টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

আপিলের পর যাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়েছে তারা হলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারী আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর।

তবে আপিলে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডভোগ করছেন জামায়াতের আরেক নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।

এছাড়া ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযম ও আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আবদুল আলীম এবং মৃত্যুদণ্ডদেশ পাওয়া জামায়াত নেতা আবদুস সুবহান মারা যাওয়ায় তাদের করা পৃথক আপিল অকার্যকর ঘোষিত হয়েছে।  

এদিকে আপিল বিভাগে জামায়াতের নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর ওই রায়ের প্রেক্ষিতে কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানাও পাঠিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তবে ২০২১ সালের ১৯ জুলাই মৃত্যুদণ্ডের রায় পুর্নবিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেছেন এটিএম আজহার এবং ২২ অক্টোবর রিভিউ চেয়েছেন সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার। এ দুটি রিভিউ এখন শুনানির অপেক্ষায়।

বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন আছে ৪০টি মামলা। আর ট্রাইব্যুনালে চলছে ৩৫টি মামলার বিচারকাজ।

তবে দল হিসেবে জামায়াতের বিচার এখনো শুরু হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন-আইন সংশোধন হলে জামায়াতের বিচার শুরু হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
ইএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।