ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন ঘিরে স্লোগান-পাল্টা স্লোগান, ডিম ছোড়াছুড়ি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২৩
সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন ঘিরে স্লোগান-পাল্টা স্লোগান, ডিম ছোড়াছুড়ি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের স্লোগান ও পাল্টা স্লোগানে হট্টগোল সৃষ্টি হয় | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ডিম ছোড়াছুড়ি ও স্লোগান-পাল্টা স্লোগানে দিনভর উত্তাল ছিল সুপ্রিম কোর্ট।

রোববার (০২ এপ্রিল) দুপুর ১টা থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের স্লোগান ও পাল্টা স্লোগানে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

এ সময় ডিম ছোড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

সরকার সমর্থক আইনজীবীরা দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন। তারা সমিতি ভবনে এবং নিচতলায় অডিটোরিয়ামের সামনে বিক্ষোভ করেন। অপর দিকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরাও সমিতি ভবনের নিচতলায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।

বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের নেতৃত্বে আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। অপরদিকে সরকার সমর্থক শতাধিক আইনজীবী পাল্টা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে আদালত প্রাঙ্গণ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এডহক কমিটির মতবিনিময়
আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি স্লোগানের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামের সামনে নবগঠিত এডহক কমিটি মতবিনিময় করে। কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন রশিদ বলেন, দুপুর ২টায় আইনজীবীদের সঙ্গে অডিটোরিয়ামে আমাদের মতবিনিময় করার কথা ছিল। কিন্তু চর দখলের মতো তারা চারিদিকে তালা মেরে রেখেছে। তালা মারা থাকায় আমরা অডিটোরিয়ামের সামনেই মতবিনিময় করছি।

তিনি বলেন, আমরা বেলা ১১টায় বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধাণ প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম আমির-উল ইসলামের নেতৃত্বে প্রধান বিচারপতির সাথে দেখা করেছি। তাঁকে আমরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। সেখানে আমরা বলেছি, এই অনির্বাচিত সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে আপনি কোনো সম্পর্ক রাখবেন না। সভাপতি ও সম্পাদক হিসেবে কোনোভাবেই তাদের আপনি গ্রহণ করবেন না। আমরা সুপ্রিম কোর্ট বারের অফিসকেও জানিয়ে দিয়েছি। শুধু আমাদের আদেশই মানবেন। অন্য কোনো আদেশ চলবে না। আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি। আমার নেতৃত্বে গঠিত সমিতির এডহক কমিটিই সম্পূর্ণ বৈধ। তারা সমিতির ডিগনিটি নষ্ট করেছে।

এ সময় এডহক কমিটির সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদল, কমিটির সিনিয়র সদস্য গিয়াস উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকশ’ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।



দুপুর আড়াইটায় সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনে ল’ রিপোর্টাস ফোরামের কার্যলায়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এডহক কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ মহসিন রশিদ বলেন, বারে যেটা হয়েছে তার নিন্দা জানাই। সমিতির দয়িত্ব হস্তান্তরের সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় দিয়ে তড়িঘড়ি করে কয়েকজন সদস্য নিয়ে পোনে ২টায় হঠাৎ করে সাধারণ সভা ও দায়িত্ব হস্তান্তরের এমন ঘটনা সুপ্রিম কোর্ট বার প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনোই ঘটেনি।

তিনি বলেন, সাধারণ সদস্যদের তলবি সভায় আজকের এই এডহক কমিটি। এই কমিটি ছাড়া বারে বর্তমানে আর কোনো কমিটি নেই।

প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দেওয়া প্রসঙ্গে এবং বারের সমস্যা সমাধানে তিনি উদ্যোগ নিতে পারেন কিনা, এ প্রশ্নের জাবাবে মোহাম্মদ মহসিন রশিদ বলেন, প্রধান বিচারপতি এতে ইনভলভ হতে পারেন না। এটা আইনজীবীরাই সমাধান করবেন।

গত ৩০ মার্চ সমিতির সাধারণ সদস্যদের এক তলবি সভা সিদ্ধান্তে বলা হয়, ১৫-১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদকে আহ্বায়ক এবং আইনজীবী শাহ্ আহমেদ বাদলকে সদস্য সচিব করে সুপ্রিম কোর্ট বারে ১৪ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়।

এর আগে ১৫ ও ১৬ মার্চ হট্টগোল, হামলা, ভাঙচুর, মামলা, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৪টি পদের সবকটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়। দুই দিনব্যাপী এ নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২৩
টিএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।