ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

তালগাছ উপড়ানো ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে বরখাস্তের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
তালগাছ উপড়ানো ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে বরখাস্তের নির্দেশ

ঢাকা: সড়ক নির্মাণ করার সময় অন্তত ৩০টি তালগাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির আরও অন্তত ৪০টি গাছের চারা উপড়ে ফেলার ঘটনায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফজলু গাজী ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সোবাহান হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে চেয়ারম্যান ও সদস্য তলবে হাজিরের পর বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের সাসপেন্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করতে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা বরখাস্ত থাকবেন।

পাশাপাশি ৩০ মে পশ্চিম নজির পুর সড়ক প্রকল্পের প্রকৌশলীকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হাজির হতে বলেছেন।  

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস-আল-হারুনী। ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্যের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ মো. সোহেল। দৈনিক প্রথম আলোর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস-আল-হারুনী।

এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনার পর গত ৭ মে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য হাজির হন। আর ইউএনও প্রতিবেদন দেন।

গত ৬ মে দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামে এক সপ্তাহ ধরে এক্সকাভেটর দিয়ে অন্তত ৩০টি তালগাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। তালগাছগুলোর বয়স ছিল ২৫ থেকে ৩০ বছর। তালগাছের পাশাপাশি এ সড়কে বন বিভাগের রোপণ করা বিভিন্ন প্রজাতির আরও অন্তত ৪০টি গাছের চারাও উপড়ে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফজলু গাজী ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সোবাহান হাওলাদারের নির্দেশে এসব গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। সড়কের পাশে যারা এসব তালগাছ রোপণ করেছেন, তারা ইউপি চেয়ারম্যানের ভয়ে মুখে কিছু না বললেও ভেতরে-ভেতরে ক্ষোভে ফুঁসছেন। ’

ওই সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, পরিবেশ রক্ষায় ও বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে তালগাছ রোপণ করার জন্য প্রচার চালানো হলেও জনপ্রতিনিধিরা তা মানছেন না। শুধু তাই নয়, প্রকৃতিপ্রেমী সাধারণ মানুষের স্বেচ্ছায় লাগানো তালগাছগুলোও তারা রক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছেন না। উল্টো কেউ কেউ সেগুলোর ক্ষতিই করছেন। বীজ থেকে পরিপূর্ণ গাছ হতে দীর্ঘ সময় লাগে একটি তালগাছের। ফলে অনুমতি নিয়েও তালগাছ কাটার কোনো সুযোগ থাকা উচিত নয়। সেখানে অনুমতি ছাড়াই এতগুলো তালগাছ এক সপ্তাহ ধরে এক্সকাভেটর দিয়ে উপড়ে ফেলা হচ্ছে, কিন্তু কারও কোনো খবর হলো না? এসব গাছ বাঁচাতে বন বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসনসহ কেউই এগিয়ে এলো না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
ইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।