ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সালাউদ্দিনদের নিয়ে যে আদেশ দিলেন চেম্বার আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
সালাউদ্দিনদের নিয়ে যে আদেশ দিলেন চেম্বার আদালত

ঢাকা: সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন শুনানির জন্য ৯ জুলাই দিন রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদলত।

তবে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণক সংস্থা ফিফার দেওয়া অর্থের বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আদালত।

আর বাফুফেকে দেওয়া সরকারের অর্থের বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।

রোববার (২৫ জুন) আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকীর আদালত এ আদেশ দেন।

বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে ফিফা ও বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া অর্থ বিষয়ে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধান চেয়ে ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির পক্ষে রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ১৫ মে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে চার মাসের মধ্যে এ অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রুলে বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

অনুসন্ধানের আদেশের বিরুদ্ধে বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

রোববার (২৫ জুন) ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশ দেন চেম্বার আদালত। তবে শুনানির আগে আবেদন থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করেন কাজী সালাউদ্দিন।

আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আবদুল্লাহ আল মামুন খান। রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

পরে মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ফিফার তদন্তে শুধু আবু নাইম সোহাগের বিরুদ্ধে কিছু ইথিক্যাল রং পাওয়া গেছে। কিন্তু ফিফার রিপোর্টে কোনো করাপশন পাওয়া যায়নি। এ জন্য আমরা বলেছি ফিফার অংশটুকু দুদকের তদন্ত করার ক্ষমতা নেই।

আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান, ফিফার দেওয়া অর্থ নিয়ে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন তার ওপর আগামী ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। কিন্তু সরকারের দেওয়া অর্থ নিয়ে অনিয়মের অনুসন্ধান চলতে কোনো বাধা নেই। দুদক ইতোমধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে।

কাজী সালাউদ্দিনের আইনজীবী সাইফুল্লাহ মামুন বলেন, তিনি (সালাউদ্দিন) আবেদনটা চান না বলে আজ ওনার পক্ষ থেকে ওনার অংশটুকু প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

আরও পড়ুন: বাফুফে সাধারণ সম্পাদককে দুই বছর নিষিদ্ধ করলো ফিফা

বিবাদীরা হলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদকের চেয়ারম্যান, বিএফআইইউ প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বাফুফের কর্তা-ব্যক্তিরা।

গত ১৪ এপ্রিল আর্থিক অনিয়ম এবং কাগজ জালিয়াতির দায়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা দুই বছরের জন্য সব ধরনের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করে। এ ছাড়া বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে।

আরও পড়ুন: বাফুফেতে আজীবন নিষিদ্ধ সোহাগ

আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, ফিফার দেওয়া অর্থ বাফুফের খরচ দেখাতে তিনি ভুল ডকুমেন্ট দেখিয়েছেন।  ফিফা শুনানি ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই এই শাস্তি দিয়েছে বলে তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

সোহাগের বিরুদ্ধে সাধারণ আর্টিকেল ১৫ (দায়িত্বে অবহেলা), ১৫ (সততা) ও ২৪ (মিথ্যা তথ্য দেওয়া) ভঙ্গের অভিযোগ দেখিয়েছে তারা। এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে আবু নাঈম সোহাগকেও। অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বাফুফে ও এএফসিতে।

এরপর ১৭ এপ্রিল ইমরান হোসেন তুষারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে সোহাগকে আজীবনের নিষিদ্ধ করে বাফুফে। ওইদিন জরুরি সভা শেষে এই তথ্য জানায় দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এদিকে গত ৩ মে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেন ব্যারিস্টার সুমন। পরে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।