ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

টাঙ্গাইলের সাবেক মেয়র মুক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
টাঙ্গাইলের সাবেক মেয়র মুক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

ঢাকা: এক আবেদন  বিচারাধীন থাকার পরও ফের জামিন চেয়ে আবেদন করায় আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার আবেদন খারিজ করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ জুলাই) বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি। জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান জানান, এ মামলায় সহিদুর রহমান খান গত এপ্রিলে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন। গত এপ্রিলের জামিন আবেদনটি বিচারাধীন রেখে গত মাসে আরেকটি আবেদন করেছেন তিনি। শুনানির একপর্যায়ে বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরলে আবেদনটি খারিজ করে সহিদুর রহমান মুক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট।

মুক্তি এ মামলার আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই। তার বাবা আতাউর রহমান খান এ আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য।

দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।

এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিন পেয়ে মুক্ত আছেন।

গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি মুক্তিকে জামিন দেন টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি তার অন্তর্বর্তী জামিন বাতিল করেন।

এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। গত বছরের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট মুক্তিকে জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে। পরদিন ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।

পরে হাইকোর্টে রুল শুনানি হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর রুল শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন খারিজ হয়।

এরপর টাঙ্গাইল জেলা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন মুক্তি। একই বছরের ২৪ অক্টোবর তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। পরে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।  
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
ইএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।