ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীর যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২৩
স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীর যাবজ্জীবন

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী মনিরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৩ জুলাই) সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মো. মাসুম বিল্লাহ এ রায় দেন।  

সাজাপ্রাপ্ত মনিরুল সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভদ্রখালী গ্রামের মো. গোলাম হোসেনের ছেলে।  

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৯ সালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামের শওকত সরদারের মেয়ে সাকিবুন্নাহারের সঙ্গে কালিগঞ্জ উপজেলার ভদ্রখালী গ্রামের মো. গোলাম হোসেনের ছেলে ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ের কর্মচারী মনিরুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাদের দুটি সন্তান আছে। ২০১৩ সালের ১৩ জুলাই ভোরে স্বামী মনিরুলকে অফিসে না গিয়ে বড় মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার অনুরোধ করেন সাকিবুন্নাহার। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে মনিরুল তার স্ত্রীর মাথায় কাঠ দিয়ে আঘাত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে মনিরুলকে আটক ও রক্তাক্ত অবস্থায় সাবিকুন্নাহারকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই দিনই সাবিকুন্নাহারের মা আঞ্জুয়ারা খাতুন বাদী হয়ে মনিরুলের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় একই বছরের ১৬ জুলাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মনিরুল।  

মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) তপন ২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। যদিও পরবর্তীকালে সাবিকুন্নাহারের ছোট বোনকে বিয়ে করে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন মনিরুল।  

আদালত আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে আসামি মনিরুলের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন।  

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ও অ্যাডভোকেট তপন কুমার দাস।  

তারা বলেন, মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।

অন্যদিকে, মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ বলেন, আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।

এদিকে, আসামি মনিরুল তার প্রথম স্ত্রী সাবিবুন্নাহারের ছোট বোনকে বিয়ে করেন এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী এখন অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় আসামি ও বাদীপক্ষের সবাই আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।