ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শহীদদের সঠিক তালিকা করে স্মৃতিস্তম্ভে লিপিবদ্ধ করার আহ্বান 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
শহীদদের সঠিক তালিকা করে স্মৃতিস্তম্ভে লিপিবদ্ধ করার আহ্বান 

ঢাকা: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে স্মৃতিস্তম্ভে লিপিবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের বর্ধিত অংশ উদ্বোধন শেষে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

 

প্রধান বিচারপতি বলেন, আজকে স্বাধীনতার যে সুফল আমরা ভোগ করছি, এর পেছনে অনেকের রক্ত-আত্মত্যাগ রয়েছে। কিন্তু তাদের সঠিক তালিকা না থাকাতে স্মরণটুকু আমরা করতে পারি না। তাই শহীদদের সঠিক প্রণয়ন হওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা প্রয়োজন। মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে এই দেশ স্বাধীন করেছেন। আর এখন আমরা সেই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছি। সেজন্য আমাদের দায়িত্ব হলো মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা। যাদের ত্যাগ রয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো।

তিনি আরও বলেন, আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, ১৯৭১ সালে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় জাড়ুয়ার বিলে দুই তিন ঘণ্টার ভেতর প্রায় ১২শ লোককে হত্যা করা হয়, এই ইতিহাস কেউ জানে না। সেখানে কোনো স্মৃতিসৌধ রয়েছে কি-না, সেটাও আমরা জানি না। অথচ ওইসব শহীদদের রক্তেই আমরা সুফল ভোগ করছি। একইভাবে খুলনার চুকনগরেও একই দিনে প্রায় ১২ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে না থাকার মতো একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। ওই স্তম্ভে সেদিনের গণহত্যায় নিহত অনেক শহীদদেরই নাম নেই। তাই চুকনগর ও ঝাড়ুয়ার বিলের মতো গণহত্যায় শহীদ হওয়া মানুষদের সঠিক তালিকা তৈরি করতে আমি ইতিহাসবিদ-গবেষকদের প্রতি অনুরোধ করবো। আর সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করতে ভালো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করে সেখানে শহীদদের তালিকা লিপিবদ্ধ করতে।

কুষ্টিয়ার নিজের গ্রামের বাড়ির অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি নিজে দেখেছি, আমার বাড়ির পাশে একটি গ্রাম পরে একটি জমিদার বাড়িতে পাক আর্মিরা ক্যাম্প করে, তারা যখন চলে যায় সেখানে অনেক লোক মেরে রেখে গেছে। আমি নিজে গিয়ে ৮টি লাশ দেখেছি। কাউকে বায়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে, কাউকে গুলি করা হয়েছে। কাউকে জবাই করে রেখে গেছে।

প্রধান বিচারপতি বলেন, স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্যই আমাদের আজকের এই আয়োজন। আমি আমার বিচারপতি, কর্মকর্তাদের এবং কর্মচারীদের অনুরোধ করবো, আপনারা মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে এসে মুক্তিযুদ্ধের ইতহাস সমৃদ্ধ বই পড়বেন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার চেষ্টা করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।