ঢাকা: আফ্রিকার গবাদি পশুর জন্য তৈরি ক্ষুরা রোগ নিরাময়ে ভ্যাকসিন আমদানিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বা রেজিস্ট্রেশন কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে দায়ের করা এক রিট শুনানি শেষে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ শফিউজ্জামান।
আদালতের আদেশের কপি প্রকাশের পর রিটকারি আইনজীবী বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সাংবাদিকদের বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ সেবা বিভাগের মহাপরিচালক, আমদানিকারক ওয়ান ফার্মা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, ক্ষুরা রোগের এফএমডি ভ্যাকসিন, যার মধ্যে রয়েছে A. O. Asia-1, Sat-1, Sat-2. Sat-3 আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শনী, বিতরণ ও সরবরাহের অনুমতি প্রদান করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর যে ছাড়পত্র /রেজিস্ট্রেশন (যাহার নম্বর-407-4707-(V)-015) কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানাতে বিবাদীদের প্রতি রুল ইস্যু করা হলো।
আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ওয়ান ফার্মার আমদানিকৃত গরুর ক্ষুরা রোগের ভ্যাকসিনটি কোনোভাবেই বাংলাদেশের জন্য তৈরিকৃত নয় দাবি করে গত ১৪ মে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পক্ষে এর উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর সামস ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে দেশের প্রাণি সম্পদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং মানবদেহের জন্য অনিশ্চিত ক্ষতিকর এ ভ্যাকসিন আমদানি অতি দ্রুত নিষিদ্ধের পাশাপাশি ওয়ানফার্মার ছাড়পত্র/রেজিস্ট্রেশন বাতিলেরও আবেদন জানানো হয়।
এর আগে এক রিট আবেদেনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ জুলাই হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের কপি প্রকাশিত হয় গত ২ অগাস্ট।
এদিকে, আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবং হাইকোর্টের আদেশর পর ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর গরুর ক্ষুরারোগ নিরাময়ে এফএমডি ভ্যাকসিন আমদানির জন্য ওয়ান ফার্মার আগের লাইসেন্স (নম্বর-407-4707-(V)-015) অকার্যকর/বাতিল করে নতুন আবেদনের নির্দেশনা দিয়েছে। এতে রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা এবং প্রাণি সম্পদ ও জনসম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে দাবি করে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফি সাগর সামস জানান, ছাড়পত্র/রেজিস্ট্রেশন বাতিল/অকার্যকরের মাধ্যমে যেহেতু বিষয়টি প্রমাণিত, সেহেতু অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২৩
টিএ/এমজে