ঢাকা: ছাত্রীকে বিয়ে করা রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ যেন স্কুলের সীমানায় যেতে না পারেন সেজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
ধর্ষণ মামলায় মুশতাককে দেওয়া জামিন বহাল রেখে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম রোববার (২০ আগস্ট) এ আদেশ দেন।
আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, স্কুল গভর্নিং বডির একজন সদস্য মুশতাক এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। এই সদস্য যদি স্কুলে যাতায়াত করেন তাহলে তিনি ভবিষ্যতে আরও ছাত্রীদের ক্ষতি করতে পারেন। এজন্য তিনি যাতে স্কুলে প্রবেশ করতে না পারেন এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত। এরপরই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি স্কুলের সীমানায় যাতে যেতে না পারেন সেজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে ১৭ আগস্ট ধর্ষণ মামলায় রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাককে ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মুশতাকের বিয়ে করা ছাত্রীকে বয়স নির্ধারণের জন্য নিরাপদ হেফাজতে (সেফ কাস্টডি) পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮- এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এ মামলায় মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাককে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে।
১০ আগস্ট বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জানান, আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে (ভিকটিম) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। অভিযুক্ত মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভিকটিমকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে নিতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে তিনি ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কয়েকদিন পর অভিযুক্ত মুশতাক ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন মুশতাক। ভিকটিম এ ধরনের আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। অধ্যক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভিকটিমকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে অভিযুক্তকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে বাদী প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি অধ্যক্ষ বরং অভিযুক্ত মুশতাককে অনৈতিক কাজে সাহায্য করেন তিনি। বাদী উপায় না পেয়ে ১২ জুন ভিকটিমকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে অভিযুক্ত মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন তিনি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন এবং যৌন নিপীড়ন করছেন।
আরও পড়ুন>>>>>>
মুশতাকের জামিন, সেই ছাত্রীকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ
আইডিয়াল স্কুলের দাতা সদস্যের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিচার দাবি
‘আমি প্রাপ্ত বয়স্ক, নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেছি’
আইডিয়ালছাত্রীকে বিয়ে করা সেই মুশতাকের নামে ধর্ষণ মামলা
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
ইএস/এএটি