ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের বাইরে বিএনপিপন্থিদের কালো পতাকা মিছিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের বাইরে বিএনপিপন্থিদের কালো পতাকা মিছিল বিএনপিপন্থিদের কালো পতাকা মিছিল।

ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টে সমাবেশ ও মিছিল না করার বিষয়ে উচ্চ আদালতের আগের দেওয়া রায় অনুসরণ করার কথা বলার পর প্রাঙ্গণের আইনজীবীরা বাইরে গিয়ে কালো পতাকা মিছিল সমাবেশ করেছেন।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আয়োজনে বুধবার (৩০ আগস্ট) তারা সুপ্রিম কোর্ট মাজার গেইট থেকে বেরিয়ে কদম ফোয়ারা হয়ে সুপ্রিম কোর্টের মৎস্যভবন গেইটে পৌঁছে সমাবেশে মিলিত হন।

‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে কালো পতাকা মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, আব্দুল জব্বার ভুইয়া ও গাজী কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ।  

এর আগে সকালে বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আবেদনের শুনানির জন্য ১৯ অক্টোবর দিন ঠিক করে বুধবার আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

এ সময় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ২০০৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগের স্বপ্রণোদিত রায় অনুসরণ করতে নির্দেশ দেন।  

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।

শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ‘আমরা বাংলাদেশের বিচারপতিরা আমরা হলাম শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’- আপিল বিভাগের এক বিচারপতির এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে মিছিল-স্লোগান-সভা অব্যাহত রাখায় বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) আপিল বিভাগে এমন আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।

আবেদনে বাদী হয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ নাজমুল হুদা।

বিবাদী করা হয়েছে আইনজীবী কায়সার কামালসহ সাতজনকে।

পরে এক ব্রিফিংয়ে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, আমরা তো কোর্ট অফিসার। কোর্টের ভাবমূর্তি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে কতিপয় আইনজীবীরা বিচারপতিদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের শব্দ বলছেন। যা আদালত অবমাননার শামিল।

গত ১৭ আগস্ট সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির আইন সম্পাদক ও ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।  

 লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত এক শোক সভায় প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের কয়েকজন বিচারপতির বক্তব্য বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং ১৬ আগস্ট জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে আজ আমাদের সংবাদ সম্মেলন।

তিনি বলেন,আলোচনা সভায় বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবীদ হিসেবে বিচারপতিদের চিহ্নিত করেছেন। তিনি স্পষ্টতই দেশের চলমান রাজনৈতিক বিষয়ে শাসক দলের নেতাদের মতো রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, ইদানিং সুষ্ঠু নির্বাচন, বিদেশি প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এসব নিয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে, শুধু ভোট দেওয়াই একমাত্র গণতন্ত্র নয়।  

বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের যে মৌলিক অধিকার জনগণের রয়েছে তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন সারা পৃথিবীতে নির্বাচন হয় কেউ তাকিয়েও দেখে না, নির্বাচন ঘিরে সব নজর বাংলাদেশের দিকে কেন! 

কায়সার কামাল বলেন, বিচারকদের এহেন বক্তব্য কতটুকু বিচারক সুলভ বা রাজনৈতিক মতাদর্শের পরিচায়ক তা সহজেই অনুমেয়। তারা বিচারপতির মহত্ত্ব ধারণ করতে পারেন কি না তা জনমনে অনেক সংশয় ও প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। এরপর বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মিছিল-সভা-স্লোগান দিয়ে আসছেন। এমন প্রেক্ষাপট তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।