ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

খালেদার নাইকো মামলা

এফবিআই কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণে আবেদন, এজলাসে হট্টগোল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩
এফবিআই কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণে আবেদন, এজলাসে হট্টগোল

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার (এফবিআই) এক কর্মকর্তা ও কানাডিয়ান রয়েল পুলিশের দুই সদস্যকে সাক্ষ্য হিসেবে হাজির করতে সমন ইস্যুর আবেদন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ আবেদন দাখিল করা হয়।

তাদের সাক্ষী হিসেবে হাজির হতে সমন ইস্যু করা হবে কি না সে বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।

এদিকে মামলার বাদী এজাহার দেখে দেখে জবানবন্দি দিচ্ছেন অভিযোগ করে তা বন্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। সেই আবেদন উচ্চ আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে জানিয়ে শুরুতেই সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। তবে আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করে সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা এজলাস কক্ষে হট্টগোল করেন।

পরে মামলার বাদী দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম এদিন তার জবানবন্দি শেষ করেন। এরপর গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও সেলিম ভূঁইয়ার পক্ষে তাদের আইনজীবী জেরা শেষ করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে জেরার জন্য সময় আবেদন করা হয়। আদালত খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের জেরার জন্য আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান এবং মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানি করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে শেখ জাকির হোসেন, সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, জিয়া উদ্দিন জিয়া প্রমুখ আইনজীবী শুনানি করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন পরে সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলা চলাকালীন কানাডাতে এবং এফবিআই আমেরিকা এটার তদন্ত করেছিল। মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্টেন্সের আওতায় সেখানের অ্যাটর্নি জেনারেল ওটার দায়িত্বে ছিলেন। সেক্ষেত্রে উনি একটা দরখাস্ত দিয়েছিলেন আদালতের কাছে যে, উনাদের কোর্ট যেন সমন ইস্যু করে, উনারা এখানে সাক্ষ্য দেবেন এবং সেই কাগজগুলো জমা দেবেন। যেগুলো উনারা কানাডিয়ান আদালতে জমা দিয়েছেন। সেই আবেদনটা আজ দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আদেশের জন্য আদালত ১৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

অপরদিকে আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

গত ১৯ মার্চ এ মামলায় চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর গত ২৩ মে আদালতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম। তবে মামলার চার্জ গঠনের বৈধতা প্রশ্নে হাইকোর্টে আবেদন করায় গত ২২ আগস্ট এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। এরপর গত ৩০ আগস্ট বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেন।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার নামে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

দুদকের করা অপর দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। পরে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ই সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩
কেআই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।