ঢাকা: মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘর্ষে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানের বিরুদ্ধে হওয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলার রায় ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর)।
এ দিন দুপুরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।
আলোচিত এই মামলার রায়কে ঘিরে ঢাকার আদালতের এজলাসের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দুপুর পৌনে ২টার দিকে অন্তত এক ডজনের বেশি পুলিশ সদস্যকে আদালতের এজলাসের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ পুলিশের পরিদর্শক ফারুকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এই রায় ঘিরে যাতে আদালত প্রাঙ্গণে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, এজন্য পুলিশ সচেষ্ট আছে।
গত ২৪ আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এই মামলার রায়ের জন্য ৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। তবে ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় পরবর্তীতে ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করা হয়।
এ মামলায় আদিলুর রহমান খান ছাড়াও অধিকারের পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকেও আসামি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা দুজনই জামিনে আছেন।
মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের সর্বোচ্চ ১৪ বছর ও সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড হতে পারে।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালে হেফাজতের শাপলা চত্বরে সমাবেশে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। ওই বছরের ১০ জুলাই নিহতের তালিকা চেয়ে অধিকারকে চিঠি দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু সংগঠনটি তালিকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরে একই বছর ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ডিবির উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম। ওই দিনই গ্রেপ্তার হন অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান। ওই বছরের ৯ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি।
তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ৩২ জনকে সাক্ষী করে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক আসামি এলানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি মামলাটিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত আদেশের পর উচ্চ আদালতে মামলা বাতিল চাইলে উচ্চ আদালতের আদেশে বিচারকাজ স্থগিত হয়ে যায়।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য শুরুর দুই বছরের ব্যবধানে বিচার শেষে মামলাটি রায়ের জন্য দিন ধার্য হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
এসসি/কেআই/এমজেএফ