ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

কলাপাড়ার চিংগড়িয়া খাল রক্ষায় হাইকোর্টের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৩
কলাপাড়ার চিংগড়িয়া খাল রক্ষায় হাইকোর্টের নির্দেশ

ঢাকা: পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চিংগড়িয়া খালের বন্দোবস্ত বাতিলের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট কযেকটি দাগে অবস্থিত ভূমির সব তথ্যসহ একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

চিংগড়িয়া খালের ভূমি রেকর্ড সংশোধন, বন্দোবস্ত বাতিল এবং পুনরুদ্ধার চেয়ে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলার করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (০৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। বেলা‘র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী ও অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।

রুলে এস. এ. ৪৪১, ৪৪৩, ৫২৬ এবং ৮৪২ নং দাগে অবস্থিত ‘চিংগরিড়া খাল’ এর ৫ দশমকি ৪৬ একর ভূমি উদ্ধারের ও এ খালের জায়গা ব্যক্তি বিশেষের নামে দেওয়া বন্দোবস্ত বাতিলের ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থী বিধায় কেন তা অবৈধ, অসৎ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।

এছাড়াও ৫ দশমিক ৪৬ একর খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডীয় ভূমি উদ্ধারের এবং আইনবহির্ভূতভাবে খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডীয় ভূমির শ্রেণি নাল শ্রেণিতে রূপান্তরিত ভূমি রেকর্ড সংশোধনের নির্দেশ কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

ভূমি সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ভূমি জরিপ ও রেকর্ড অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এবং কলাপাড়া সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া পৌরসভার ভিতর দিয়ে একটি খাল প্রবাহিত হয়েছে যা স্থানীয়ভাবে ‘চিংগড়িয়া খাল’ নামে পরিচিত। খালটি কলাপাড়ার খেপুপাড়া মৌজায় আন্ধারমানিক নদী থেকে কলাপাড়া পৌরসভার ১ থেকে ৭ নং ওয়ার্ডের অংশবিশেষের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার অতিক্রম করে একই মৌজার চাকামইয়া-নিশানবাড়িয়া নদীর (দোন) সাথে মিশেছে। কলাপাড়া ভূমি অফিসের তথ্যানুযায়ী খালটির মূল স্রোতধারা খেপুপাড়া মৌজার ৪৪৩, ৫২৬ ও ৮৪২ নং দাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত।

খালটি কলাপাড়া পৌরসভার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র খাল। কলাপাড়া পৌরসভাটি উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষাকালে ও জলোচ্ছাসের সময় সমুদ্ররে লোনা পানিতে এখানকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ডুবে যায়। লবণাক্ত এ পানি এ খাল দিয়েই দ্রুত নিষ্কাশিত হয়ে থাকে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ খালটি কলাপাড়া উপজেলা ভূমি অফিস খাল হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি নাল হিসেবে পরিবর্তন করে।

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) উল্লেখিত খালের অংশবিশেষ ব্যক্তিবিশেষের নিকট দীর্ঘস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করেন। বন্দোবস্ত গ্রহীতারা খালের অংশে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় খাল ভরাট করে নির্মাণ করেছেন বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ এ খাল সংকীর্ণ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষি নির্ভর জনগোষ্ঠী। জলাবদ্ধতায় ফসল ফলাতে পারছে না শত শত একর জমির মালিকরা। খালের ভূমি রেকর্ড সংশোধন ও শ্রেণি পরিবর্তন এবং বেআইনিভাবে প্রদানকৃত বন্দোবস্ত বাতিলসহ খালটি যথাযথ সংরক্ষণে বেলা রিট করে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২৩
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।