ঢাকা: ১৪ ডিসেম্বর থেকে ‘নিখোঁজ’ থাকা বগুড়ার কাহালু উপজেলা বিএনপির দুই নেতার অবস্থান সম্পর্কে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৪ জানুয়ারির মধ্যে পুলিশ মহাপরিদর্শককে এ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
দুই নেতাকে হাজিরে (হেবিয়াস কর্পাস) তাদের পরিবারের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি জানান, আদালত রুল ইস্যু করেছেন। পুলিশের মহাপরিদর্শককে আগামী ৪ জানুয়ারির মধ্যে তাদের অবস্থা কোথায় কীভাবে আছে লিখিতভাবে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। রুলে কেন আদালতের সামনে তাদের উপস্থাপন করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
নিখোঁজ দুই নেতা হলেন কাহালু উপজেলা বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ওরফে হৃদয় এবং উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। আনোয়ার হোসেনের বাড়ি বীরকেদার ইউনিয়নের ভোলতা গ্রামে আর দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি মদনাই গ্রামে।
মঙ্গলবার রিটের পর আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, ১৪ ডিসেম্বর এই দুই নেতাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। একজনকে বিকেল ৫টায় আরেকজনকে রাত ৯টায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবার দুটি পৃথক জিডি করে। ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়নি। পরিবার এখন পর্যন্ত হদিস পাচ্ছে না। তাই তাদের পরিবার হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস রিট করেছে।
রিটে বিবাদী করা হয়েছে, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালক, বগুড়ার পুলিশ সুপার, বগুড়ার ডিবি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বিএনপি নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
২১ ডিসেম্বর নিখোঁজ বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী আঁখি বেগম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ১৪ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শেরপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমির সামনে থেকে ডিবি পরিচয়ধারী সদস্যরা আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
আর দেলোয়ারের পরিবারের দাবি, ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি থেকে স্থানীয় পলীপাড়া বাজারে চা খেতে যান। সেখান থেকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে কল করে একটু পরে বাড়ি ফেরার কথা বলেন। কিন্তু এরপরই আনোয়ার হোসেনের মাধ্যমে কল করে দেলোয়ারকে দুপচাঁচিয়া সদরে ডেকে নেওয়া হয়। সেই থেকে তার খোঁজ পাচ্ছেন না।
বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) মোস্তাফিজ হাসান বলেন, এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা যে অভিযোগ করেছেন, তা ভিত্তিহীন।
শেরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, আমরা জিডির পরেই ওই ব্যক্তির লোকেশন নিয়েছিলাম। সেখানে তার অবস্থান দুপচাঁচিয়ায় দেখায়। তাকে উদ্ধারে পুলিশের টিম কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩
ইএস/এমজেএফ