কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় স্ত্রী হত্যার দায়ে মো. আলামিন (৪৪) নামে এক ভুয়া ডাক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম আসামি আলামিনের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় জানেরা খাতুনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম লালন।
সাজাপ্রাপ্ত আলামিন মিরপুর উপজেলার শাকদহ চর গ্রামের মো. আহাদ আলীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হালসা এলাকার ‘হালসা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল আলামিনের। তিনি চিকিৎসক না হয়েও নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি ও তার স্ত্রী শিউলি খাতুন (২৮) ওই ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় থাকতেন। ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টা থেকে ২৯ অক্টোবর রাত দেড়টার মধ্যে কোনো এক সময় তিনি তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মরদেহ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন আলামিন। খবর পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা শাকদহচর এলাকার শমসের আলীর ছেলে আশাদুল বাদী হয়ে একই দিন (২৯ অক্টোবর) মিরপুর থানায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে মো. আলামিন ও জানেরা খাতুনের (৩২) নামে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর থানার সেই সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাফর আহমেদ ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দেন। এতে তিনি এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া আলামিন ও জানেরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম লালন জানান, বহুনারী আসক্ত হওয়ায় আলামিনের সঙ্গে স্ত্রী শিউলির দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। এর জেরে শিউলিকে হত্যা করেন আলামিন। শুনানি শেষে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সোমবার এ রায় দেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৪
এসআই