ফরিদপুর: ফরিদপুরে হত্যা মামলায় স্বাধীন শেখ (২৯) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার একমাত্র আসামি স্বাধীন শেখ আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের মধুখালীর আড়কান্দি গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদুল শেখ (২১) ও স্বাধীন শেখ। তারা হৃদিশা কোহিনুর কোম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে স্বাধীনের চাকরি চলে যায়। এ কারণে স্বাধীন তৌহিদুল এবং তাদের আরেক সহকর্মী মধুখালীর দয়ারামপুর গ্রামের মো. মকিদুল ইসলামকে (২১) দোষারোপ করেন। ওই বছর ১৭ ডিসেম্বর তৌহিদুল ও মকিদুল বিভিন্ন দোকানে কোম্পানির মালামাল পৌঁছে দেওয়ার জন্য মধুধালী বাজার থেকে নসিমনে করে গাজনা বাজার এলাকায় দিকে রওনা হয়। সকাল ১০টার দিকে শ্রীপুর গ্রামের "স" মিলের সামনে পাকা সড়কে পৌঁছালে নসিমনের গাড়ি রোধ করে স্বাধীন শেখ তাদের গালিগালাজ করেন। স্বাধীনকে তারা গালিগালাজ করতে মানা করায় স্বাধীন ক্ষিপ্ত হয়ে মকিদুলকে কিল-ঘুসি মারে। তখন তৌহিদুল ঠেকাতে গেলে তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এ ঘটনায় তৌহিদুল গুরুতর আহত হয়ে ওই দিন রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় তৌহিদুলের বাবা মো. সাখাওয়াত শেখ (৫৯) বাদী হয়ে মধুখালী থানায় হত্যার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর হোসেন ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাধীনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তৌহিদুলের ভাই শামসুল শেখ বলেন, আমরা দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তৌহিদুল ছিল সবার ছোট। সবার আগে তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেওয়া হল। আমার ভাইকে আর ফিরে পাবো না এ কষ্ট আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।
আদালতের পিপি নওয়াব আলী মৃধা বলেন, এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
এসএম