ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ২৯ আগস্ট ২০২৪, ২৩ সফর ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সাবেক তিন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৪
সাবেক তিন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন

ঢাকা: ‘আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূতভাবে রায়’ দেওয়ার অভিযোগ এনে সাবেক তিন প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাবেক সাত বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।

বুধবার (২৮ আগস্ট) হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আদালত অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে ইউনুছ আলীকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং তিন মাসের জন্য আইন পেশা থেকে বিরত থাকার রায় দেন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগ।  

ওই রায়কে ‘আইনগত  কর্তৃত্ব বহির্ভূত’ বলে তৎকালীন সাত বিচারপতির বিরুদ্ধে ইউনুছ আলী আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্ট আবেদন করেন।     

সাবেক সাত বিচারপতি হলেন, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী (পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি ওবায়দুল হাসান (পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি), বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বিচারপতি মো.আবু বকর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান।

ইউনুছ আলী আকন্দের অভিযোগ, এ বিচারপতিরা ক্ষমতার অপব্যহার করে আইনগত এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে অসাংবিধানিকভাবে আদালত অবমাননা আইন, ১৯২৬ লঙ্ঘন করে কোনো শুনানির সুযোগ না দিয়ে আদালত অবমাননার নামে তাকে শাস্তি দেন।

তিনি জানান, প্রথমে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শুনানির সুযোগ না দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্র্যাকটিস (আইন পেশা পরিচালনা থেকে বিরত রাখা) সাসপেন্ডসহ আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়। দ্বিতীয় শান্তি দেওয়া হয় একই বছরের ১২ অক্টোবর। ওইদিন প্র্যাকটিস সাসপেন্ডসহ জরিমানা করা হয়।

এ আইনজীবীর মতে, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টসহ সব কোর্টে আদালত অবমাননা হলে আদালত অবমাননা আইন, ১৯২৬ এর ৩ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাইকোর্ট শাস্তি দিতে পারেন, কিন্তু আপিল দ্বারা নয়।  

বার কাউন্সিল আইনের ৩২ ধারায় ট্রাইব্যুনাল আইনজীবীর পেশাগত অসদাচরণ প্রমাণিত হলে পেশা সাসপেন্ড করতে পারে কিন্তু আপিল দ্বারা নয়। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক নয়।  

ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি মামলা করা যায়। কিন্তু সংবিধান ১০২ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় এবং ১০৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়। সংবিধান ১০৪ ও ১০৮ অনুচ্ছেদে আপিল বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় না।

ইউনুছ আলী আকন্দ আরও জানান, হাইকোর্টের আদালত অবমাননা রায়ের বিরুদ্ধে অনুচ্ছেদ ১০৩ (২) (গ) অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়। সংবিধান ১০৪ অনুচ্ছেদে বিচারাধীন আপিলে সম্পূর্ণ ন্যায় বিচারের জন্য যেরূপ প্রয়োজন সেরূপ আদেশ দিতে পারবে, কিন্তু সরাসরি কোনো মামলায় নয়।  

তিনি জানান,  সরাসরি আপিল বিভাগে আপিল হয়। এ বিচারপতিরা ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে শপথ ভঙ্গ করে শুনানির সুযোগ না দিয়ে অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়ে প্র্যাকটিস থেকে বিরত রাখেন, যা সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে মানবাধিকার লঙ্ঘন।  

আপিল বিভাগে ওই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার খর্ব করে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ অনুযায়ী সবাই সমান এবং ৩১ অনুচ্ছেদে আইন ছাড়া কিছু করা যাবে না বলে উল্লেখ আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা,আগস্ট ২৮, ২০২৪
ইএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।