লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলায় বহুল আলোচিত দিপালী দেব সিংহ হত্যা মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে লালমনিরহাটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আদিব আলী আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম হলদিবাড়ী এলাকার ওসমান আলী (৫২) ও একই এলাকার মেছের আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৪১)।
মৃত গৃহবধূ দিপালী দেব সিংহ হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্ব বেজগ্রাম এলাকার পরিমল দেব সিংহের স্ত্রী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, দিপালী দেব সিংহের সঙ্গে এক যুবকের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ওই যুবক থাকতেন সিলেটে। প্রেমিকের কাছে যেতে গত ২০২০ সালের গত ৯ জুলাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হলে ১৪ জুলাই হাতীবান্ধা থানায় জিডি করে তার পরিবার। নিহত দিপালী দেব সিংহ তার সিলেটের প্রেমিকের কাছে যেতে ওসমান ও রবিউলের সাহায্য চান। দিপালীর কাছে ছিল সাড়ে তিন লাখ টাকা। তখন ওসমান ও রবিউল তাকে বোরকা পরিয়ে তিস্তার চরে নিয়ে হত্যা করে মরদেহ বালুচাপা দিয়ে দিপালীর কাছে থাকা সাড়ে তিন লাখ নিয়ে পালিয়ে যান।
এদিকে ১৮ জুলাই সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ আনন্দ বাজার এলাকায় তিস্তা নদীর চর থেকে দিপালীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অপর দিকে জিডির সূত্র ধরে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ ওসমান ও রবিউলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা দিপালী দেব সিংহকে হত্যা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
দিপালী হত্যার ঘটনায় নিহতের ভাশুর নির্মল দেব সিংহ ওই বছরের ২২ জুলাই ছয়জনের নামে হাতীবান্ধা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ ছয়জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
আলোচিত এ হত্যা মামলাটি দীর্ঘ শুনানি শেষে সোমবার রায় দেন আদালত। হত্যার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ওসমান আলী ও রবিউল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় বাকি চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট আদালত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
এসআই