ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর অঙ্গহানি, আপাতত ১০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর অঙ্গহানি, আপাতত ১০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ

ঢাকা: সাতক্ষীরায় পল্লি বিদ্যুতের লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক শিশুর অঙ্গহানির চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় খরচের জন্য আপাতত ১০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক  মাসের মধ্যে এ অর্থ দিতে হবে।

 

ওই শিশুর পক্ষে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুহম্মদ তারিকুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজ বিন ইউসুফ।

২০২১ সালের মার্চে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নকশা পরিবর্তন ও আব্দুর রাজ্জাকের দোতলা বাসবভনের ওপর দিয়ে ক্যাপ ও কভারবিহীন বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করে। এই লাইনে সংযোগ না দিতে পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার কাছে আবেদনও করেছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। পরে ৯ মে আব্দুর রাজ্জাক ঢালীর ৭ বছরের  শিশু রাকিবুজ্জামান ওই তারে বিদ্যুতায়িত হয় এবং এতে তার শরীর ঝলসে হাড়-মাংস খসে পড়ে। রাকিবুজ্জামানকে তাৎক্ষণিকভাবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ মে রাকিবুজ্জামানের ডান হাতের বগল থেকে ও ডান পায়ের হাঁটু থেকে নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়।

এ ঘটনার ক্ষতিপূরণ চেয়ে একই বছরের ২৫ মে আব্দুর আব্দুর রাজ্জাক ঢালী সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ক্ষতিপূরণসহ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বিবাদীরা ক্ষতিপূরণ দেননি এবং অন্য কোনো ব্যবস্থাও নেননি। তাই আব্দুর রাজ্জাক ঢালী এ রিট করেন।

৮ নভেম্বর রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই শিশুর অঙ্গহানির ঘটনায় কী ধরনের চিকিৎসা হয়েছে এবং আরও কী চিকিৎসা প্রয়োজন সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। রুলে ওই ছেলের অঙ্গহানির ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন।

এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়নের চেয়ারম্যান, পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজার, সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার, প্রকল্প পরিচালক, সাতক্ষীরার ডিসি ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সে অনুসারে ৯ ডিসেম্বর এ প্রতিবেদন দেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালামের দেওয়া ওই শিশুর চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তার চিকিৎসা পরিকল্পনা হলো কৃত্রিম হাত-পা সংযোজন করা। ওই শিশুর বায়োনিক হ্যান্ড দুই দফায় জামার্নী বা ভিয়েতনাম থেকে আনতে হবে। ২০২১ সালে তার আট বছর বয়স ধরে ২০৮৩ সাল পর্যন্ত চিকিৎসা ব্যয়ের সম্ভাব্য খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বিএলবিসির আনুমানিক সম্ভাব্য চিকিৎসা ও তার খরচ একটি তালিকা করা হয়েছে। এতে ২০২১,২৩,২৫,২৭,২৯,৩১,৩৩,৩৮,৪৩,৪৮,৫৩,৬৮,৬৩,৬৮,৭৩,৭৮ ও ৮৩ সালের রিপ্লেসমেন্ট খরচ এবং ২০২৪,২৬,২৮,৩০,৩৭,৪৬,৫৫,৭১ ও ২০৮১ সালের মেইন্টেন্যান্স খরচ ধরা হয়েছে। সর্বমোট খরচ ধরা হয়ে দুই কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ১৮২ টাকা।

আইনজীবী তারিকুল ইসলাম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ বিভিন্নভাবে সময় ক্ষেপণ করছে। তাই আপাতত ১০ লাখ টাকা চেয়ে একটি আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে এক মাসের মধ্যে এ টাকা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৫
ইএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।