নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ ও গলা টিপে হত্যার দায়ে মো. সাকিব (২৪) নামে একজনের শিশু আইনে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার সময় নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন।
নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে গুরুদাসপুর উপজেলার বালসা গ্রামের মনিরুল ইসলামের শিশু কন্যা খাদিজা খাতুন আপন চাচা মিলনের বাড়িতে টেলিভিশন দেখতে যায়। সেসময় তার চাচাতো ভাই সাকিব একাই ওই ঘরে বসে টেলিভিশন দেখছিল। ঘটনার সময় বাড়িতে পরিবারের অন্য কেউ ছিল না।
চাচাতো বোন খাদিজাকে একা পেয়ে মুখে গামছা বেঁধে ধর্ষণ করে সাকিব। এতে রক্তক্ষরণ হয়ে অসুস্থ পড়ে খাদিজা। এ অবস্থায় সাকিব ভয় পেয়ে খাদিজাকে গলা টিপে হত্যা করে। পরে তার বাবা-মাকে বিষয়টি খুলে বলে এবং তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী খাদিজার মরদেহ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে।
অন্যদিকে খাদিজার মা-বাবা, আত্মীয় স্বজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সেসময় সাকিবের পরিবারের সদস্যরাও খোঁজাখুঁজিতে অংশ নেন। খাদিজার সন্ধান না পেয়ে ২১ ডিসেম্বর বাবা মনিরুল ইসলাম ওরফে মধু গুরুদাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এদিকে সাকিব ও তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে খাদিজার মরদেহ রাতের আধাঁরে বাড়ির পাশে একটি দীঘিতে ফেলে দেয়।
ঘটনার দুইদিন পর ২২ ডিসেম্বর খাদিজার বস্তাবন্দি মরদেহ পাশের দিঘি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মনিরুল বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্তে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযানে নেমে মিলন হোসেনের ছেলে সাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাকিবের স্বীকারোক্তি ও তথ্য প্রমাণ, ডিএনএ পরীক্ষা এবং দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরে আলম সিদ্দীকী ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দেন। ওই মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক আজ এই রায় ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সাকিবের বয়স ছিল ১৬ বছর। তাই বিচারক শিশু আইনে তাকে এই আটকাদেশ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
আরএ