ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ শাবান ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিচার-নির্বাহী বিভাগের কাজ সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত: প্রধান বিচারপতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫
বিচার-নির্বাহী বিভাগের কাজ সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত: প্রধান বিচারপতি জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা বিচার বিভাগের দায়িত্ব। আর নির্বাহী বিভাগের দায়িত্ব হচ্ছে আইনের শাসন, নীতির বাস্তবায়ন, স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং শাসনকে সহজতর করা।

কাজের ধরন আলাদা হলেও বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের কাজ সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত। কোনোভাবেই তা বিরোধপূর্ণ হওয়া উচিত নয়।

তিনি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের আহ্বান জানান।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি জেলার বিচার বিভাগ ও জেলা প্রশাসন, দুটি স্বতন্ত্র স্তম্ভ হলেও অবিচ্ছেদ্যভাবে দাঁড়িয়ে আছে। দুটি স্তম্ভেরই উদ্দেশ্য অভিন্ন। প্রশাসন ও বিচার বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টা জনসাধারণের আস্থাকে দৃঢ় করার পাশাপাশি তৃণমূলপর্যায়ে আইনের শাসনকে সমুন্নত রাখে। বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামোতে জেলা প্রশাসন সমাজে ন্যায়বিচারকে দৃশ্যমান করে তোলে।

সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদের বিধান তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, সাংবিধানিকভাবে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা আলাদা হলেও ব্যবহারিক প্রয়োজনে তাতে নিরবচ্ছিন্ন সমন্বয় প্রয়োজন।

সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে দেশের সর্বোচ্চ বিচারাঙ্গন সুপ্রিম কোর্টকে দুই বিভাগেরই সহায়তা দিতে হবে। সরকারি কোনো আদেশ-নির্দেশ, বিজ্ঞপ্তি সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে অগ্রাহ্য বা বিলম্বিত করতে পারে না। আশা করছি, আইনের শাসন বজায় রাখার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করবেন।

সম্মেলনে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার এবং যশোর ও নাটোরের জেলা প্রশাসক বক্তব্য দেন।

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, সরকারি স্বার্থসংশ্লিষ্ট দেওয়ানি মামলায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন।

এসব মামলা আরও দ্রুত নিষ্পত্তিতে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে একজন জেলা প্রশাসককে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চ আদালতের অন্তর্বর্তী বা স্থায়ী আদেশ আছে কি না, জানা সম্ভব হয় না। পরে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেন তিনি।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে জেলা প্রশাসকরা যাতে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ-নির্দেশ, রায় সরাসরি পেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করার জন্য প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেন নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।

তিনি বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি লাঘবে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে জেলাপর্যায়ে বিচারক, প্রশাসন ও আইনজীবীদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাবও তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।