ঢাকা: সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড কমিটির নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। বিদায়ী চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়ায় তার স্থলে আসেন বিচারপতি ইনায়েতুর।
আগামী ১ মার্চ থেকে তিনি লিগ্যাল এইডের দফতরে অফিস করবেন বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ।
বার্ষিক আয় দেড় লাখ টাকার উর্দ্ধে নয় এমন ব্যক্তিদের বিনামূল্যে আইনি সেবা দিতে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর অফিসটি উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এর আগে গঠন করা হয় সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি।
তখন এ কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. নিজামুল হক। সঙ্গে রয়েছেন আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীসহ ১১ জন সদস্য। এর মধ্যে চেয়ারম্যানসহ ১০ জন নিয়ে মূল লিগ্যাল এইড কমিটি। বাকি দু’জন পর্যবেক্ষক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি নিজামুল হক আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। এ কারণে তার স্থলে ১৮ ফেব্রুয়ারি নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
২০০৯ সালের ৩০ জুন অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে হাইকোর্টে নিয়োগ পেয়েছিলেন এম ইনায়েতুর রহিম। দুই বছর পর ২০১১ সালের ৬ জুন স্থায়ী হন বিচারপতি হন তিনি।
পরে ২০১৪ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরের বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এ বিচারপতিকে হাইকোর্টে ফিরিয়ে আনা হয়।
১৯৬০ সালের ১১ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন ইনায়েতুর রহিম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করার পর এলএলবি ডিগ্রি নেন।
১৯৮৯ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০২ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়া তিনি অতিরিক্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
দেশের স্বল্প আয়ের ও অসহায় নাগরিকদের আইনি সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন’ করা হয়। এ আইনের অধীনেই প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা। এ সংস্থার অধীনে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৬৪ জেলায় লিগ্যাল এইড কমিটি কাজ করছে।
এ কমিটির মাধ্যমে বার্ষিক আয় দেড় লাখ টাকার উর্দ্ধে নয় এমন ব্যক্তিদের বিনামূল্যে আইনি সেবা দেওয়া হয়। পাঁচটি ক্যাটাগরিতে বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। ক্যাটাগরিগুলো হলো- ফৌজদারি আপিল ও রিভিশন, দেওয়ানি আপিল ও রিভিশন, জেল আপিল, রিট পিটিশন ও লিভ-টু-আপিল।
সুপ্রিম কোর্টে আইনি সেবা দেওয়ার জন্য লিগ্যাল এইড অফিস হাইকোর্ট বিভাগে ৬৯ জন এবং আপিল বিভাগে ৫ জন আইনজীবীকে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট রিপন পৌল স্কু’র তথ্য মতে, ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১০৫টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৮০টি আবেদন গ্রহণ করে সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫
ইএস/এএসআর