পর্নোগ্রাফি একটি ভয়াবহ ব্যধিতে পরিণত হয়েছে। উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে পর্ণোগ্রাফি।
আইনে বলা হয়েছে, যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোনো অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গী, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য যা চলচ্চিত্র, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজুয়াল চিত্র, স্থিরচিত্র, গ্রাফিকস বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণকৃত ও প্রদর্শনযোগ্য বিষয়াদি পর্নোগ্রাফি হিসেবে গণ্য হবে।
এছাড়া এমন কোনো বিষয়াদি যার কোনো শৈল্পিক বা শিক্ষাগত মূল্য নেই এমন যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী অশ্লীল বই, সাময়িকী, ইত্যাদি বিষয়ও পর্নোগ্রাফি হিসেবে গণ্য হবে।
পর্নোগ্রাফির সাথে যারা জড়িত আইনে তাদের শাস্তির বিধান আছে। আইন বলছে, কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি তৈরি করলে বা কোনো নারী, পুরুষ বা শিশুকে একাজে বাধ্য করলে তার সেই কাজও অপরাধ বলে গণ্য হবে। এছড়া আরো বলা আছে, কোনো নারী, পুরুষ বা শিশুকে কোনো প্রলোভনে দেখিয়ে তার অজ্ঞাতে কোনো চিত্র ধারণ করলে সে কাজও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
আইনে এসব অপরাধের জন্য অপরাধীকে সর্বোচ্চ ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হবে। এছাড়া দুই লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হতে পারেন।
শিশুদের পর্নোগ্রাফিতে ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। আইনানুযায় এদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা আছে।
শিশুদের ব্যবহার করে পর্ণোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণকারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। আইনে এদের জন্য সর্বোচ্চ দশ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। এছাড়া পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানও আছে।
পর্নোগ্রাফি একটি চুড়ান্ত সামাজিক অবক্ষয়ের লক্ষণ। সামাজিক অবক্ষয়ের ফলেই পর্নোগ্রাফির ব্যাপ্তি। আইন বলছে, কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে কারো সামাজিক বা ব্যক্তি মর্যাদা হানি করলে পাঁচ বছরের শাস্তি ভোগ করবেন। এছাড়া দুই লাখ টাকা টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
আমরা অনেক সময়ই দেখি প্রেমিকা বা কোনো মেয়েকে জিম্মি করে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। তার ওপর যৌন নিযাতন করা হয়।
আইনানুযায়ী এদের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান আছে। এসব অপরাধের জন্য অপরাধীকে সর্বোচ্চ পাচ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া যেতে পারে। এছাড়া দুই লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করা যেতে পারে।
ইন্টারনেটের অপব্যবহারের ফলে পর্নোগ্রাফি আরো বেড়ে যাচ্ছে। ফলে যুব সমাজের মাঝে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে পর্নোগ্রাফি। আইনে এদের বিরুদ্ধেও শাস্তির বিধান আছে। কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইট বা মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি সরবরাহ করলে তাকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেয়া হবে।
কিন্তু শুধু আইন থাকলেই হবেনা। আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে। ঘরে ঘরে পর্নোগ্রাফি যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ছাড়া একে নিয়ন্ত্রণ করার আর কোনো পথ নেই। সামাজিক মূল্যবোধের অভাবেই এমনটি হচ্ছে। আইন প্রয়োগ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬