মুসলিম উত্তরাধিকার আইন একজন ব্যক্তির সকল উত্তরাধিকারীকেই তার সম্পত্তির অধিকার প্রদান করেছে। উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টন করার ক্ষেত্রে অনেকেই উত্তরাধিকার আইন অনুসরণ করেন না।
উত্তরাধিকার কী:
কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে মৃতের আনুষ্ঠানিকতা সম্মপন্ন হওয়ার পর, তার দেনাশোধ বা তিনি যদি কোনো উইল সম্পাদন করেন তা হস্তান্তরের পর যে সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে সে সম্পত্তির ওপর তার সন্তানাদি ও আত্মীয় স্বজনের যে অধিকার তাই উত্তরাধিকার। এর মানে, একজন ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করলেই উত্তরাধিকার কাযকর হয়।
বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন নিয়মে উত্তরাধিকার বণ্টন করা হয়। মুসলিম আইনে সাধারণ তিন শ্রেণির উত্তরাধিকার আছে- অংশীদার, অবশিষ্টাংশ ভোগী ও দূরবর্তী আত্মীয়স্বজন।
মুসলিম উত্তরাধিকার অনুযায়ী যাদের অংশ পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করা আছে তারাই অংশীদার। এরপর কোরআনে মৃতের সাথে যাদের রক্তের সম্পর্ক আছে, তারাই অবশিষ্টাংশ ভোগী।
আবার যাদের সাথে মৃতের রক্তের সম্পর্ক আছে কিন্তু তারা মৃতের অংশীদারও না আবার অবশিষ্টাংশভোগীও নয়। এরাই মৃত ব্যক্তির দূরবর্তী আত্মীস্বজন। দূরবর্তীরা তখনই অংশ পাবে যখন তার কোনো অংশীদারও থাকেনা আবার অবশিষ্টাংশভোগীও থাকেনা।
কারা সব সময়ই উত্তরাধিকারী?:
মুসলিম উত্তরাধিকার আইনানুযায়ী পিতা, মাতা, ছেলে, মেয়ে, স্বামী ও স্ত্রী কখনোই উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না।
কাউকে কি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায়?:
আমরা অনেক সময়ই দেখি পিতা বা মাতা সন্তানকে বা অন্য কাউকে উত্তরাধিকার থেকে বঞিত করেন। কিন্তু আইনানুযায়ী কাউকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা বা ত্যাজ্য করা যায় না।
স্বামী কি স্ত্রীর সম্পত্তি পান?
মুসলিম আইনানুযায়ী স্বামীও স্ত্রীর সম্পত্তির অংশ পায়। সন্তান বা সন্তানের সন্তান থাকলে স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির চারভাগের একভাগ পান আর যদি সন্তান বা সন্তানের সন্তান, যত নিম্নের হউক, না থাকে তাহলে স্বামী সম্পত্তির দুই ভাগের এক ভাগ পান।
স্ত্রী কি স্বামীর সম্পত্তি পান?
আবার স্ত্রীও স্বামীর সম্পত্তির অংশ পান। সন্তান বা পুত্রের সন্তান, যত নিম্নেরই হউক, থাকলে স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ পাবেন। আর যদি সন্তান না থাকে তাহলে স্ত্রী মোট সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ পাবেন। কিন্তু যদি মৃতেরে একের বেশি স্ত্রী থাকে তবে তারা সবাই ওই অংশ সমানভাবে পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৬