ঢাকা: হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার দুই সহোদর মহিবুর রহমান বড় মিয়া ও মুজিবুর রহমান আঙ্গুর মিয়া এবং তাদের চাচাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আনা চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে।
বুধবার (০১ জুন) সকালে এ রায় পড়ছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এ তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন গ্রামে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ ৪টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল ।
সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট থেকে ২৪০ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ পড়ে শোনাচ্ছেন বিচারপতিরা।
বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী রায়ের প্রথম অংশ পাঠ করেন। এরপর রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়ে শোনান বিচারিক প্যানেলের অন্য সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম। সবশেষে রায়ের মূল অংশ বা সাজা ঘোষণা করছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক।
এর আগে সকাল নয়টায় রায় শোনাতে মহিবুর-মুজিবুর-রাজ্জাককে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়। সকাল সোয়া দশটায় তাদেরকে এজলাসকক্ষের আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়। সকাল সাড়ে দশটার পরে এজলাসে বসেন ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্য। চেয়ারম্যানের সংক্ষিপ্ত সূচনা বক্তব্যের পর রায় ঘোষণা শুরু হয়।
মহিবুর-মুজিবুর-রাজ্জাকের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় খাগাউড়া গ্রামে নেজামে ইসলামের এমএনএ সৈয়দ কামরুল আহসানের বাড়িতে রাজাকার ক্যাম্প ও টর্চার সেল ছিল। আর তাদের বড় ভাই কলমধর ছিলেন খাগাউড়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান এবং ছোট ভাই মোস্তফা ছিলেন রাজাকার কমান্ডার। তাদের নেতৃত্বে এ তিন ভাই বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন গ্রামে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে আনা চার অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে।
এর মধ্যে প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ১১ নভেম্বর বানিয়াচং উপজেলায় হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আকল আলী ও রজব আলীকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেন আসামিরা।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা পাকিস্তানি বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মেজর জেনারেল এমএ রবের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ করেন।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, একই দিন খাগাউড়া এলাকার উত্তরপাড়ায় আসামিদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী মঞ্জব আলীর স্ত্রী ও আওলাদ ওরফে আল্লাত মিয়ার ছোট বোনকে ধর্ষণ করেন। পরে আল্লাত মিয়ার বোন বিষপানে আত্মহত্যা করেন।
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ভাদ্র মাসের যেকোনো একদিন আনছার আলীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন চালান আসামিরা। ওই নির্যাতনে পঙ্গু হন আনছার আলী।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৬
ইএস/এএসআর