ঢাকা: দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে মারাত্মক আহত ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসাসেবার বিষয়ে আদালতের আদেশ না মানায় স্বাস্থ্য ও সড়ক পরিবহন সচিবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমানার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (০৬ জুন) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এক সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্যসচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা ২০১৪-১৬ অনুয়ায়ী রাষ্ট্রের সকল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে জরুরি চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন তিন মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি স্বাস্থ্যসচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং চিকিৎসা প্রাপ্তিতে বাধাপ্রাপ্ত হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কোথায় অভিযোগ দাখিল করবেন, সে বিষয়ে নীতিমালা তৈরি ও এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করার নির্দেশ দেন আদালত।
এছাড়াও হাইকোর্ট স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে দুর্ঘটনাজনিত কারণে আঘাতপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোনো ব্যক্তি যদি সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন, তবে তাদের সুরক্ষার জন্য একটি নির্দেশনা তৈরি করার নির্দেশ দেন।
তিন মাস পার হয়ে গেলেও স্বাস্থ্যসচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি প্রতিবেদন দেননি।
এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনের আইনজীবী শারমিন আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেছিলেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড ট্রাস্ট সার্ভিসেস(ব্লাস্ট) ও সৈয়দ সাইফুদ্দীন কামাল।
গত ২১ জানুয়ারি আরাফাত নামের একজন বাসের হেলপার পা পিছলে নিচে পড়ে মারাত্মক আহত হন। পরে তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই হাসপাতাল চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানায়। সেই আহত ব্যক্তিকে অন্য আরো দু’টি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেগুলো থেকেও প্রত্যাখ্যাত হয়ে গুলশান থানার একজন সাব-ইন্সপেক্টরের সহায়তায় তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, এ ঘটনা সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ, মেডিকেল ব্যবস্থা, ‘বেসরকারি ক্লিনিকসমূহ ও ল্যাবরেটরি অর্ডিন্যান্স ১৯৮২’ এর ধারা ৮, ১১ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ১৯৮০ এর ধারা ৫(ক) এর লঙ্ঘন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৬
ইএস/এএসআর