ঢাকা: ‘বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ‘তার রাজনৈতিক উচ্চশ্রেণীর অবস্থান ব্যবহার করে কন্সালটেশন ফি’র (পরামর্শক ফি) নামে তার সহযোগীর (গিয়াস উদ্দিন আল মামুন) মাধ্যমে ডার্টি মানি (নোংরা টাকা) অর্জন করেছেন’।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) অর্থপাচারের দায়ে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়ে দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অর্থপাচার মামলাটির আপিলের রায়ে তারেক রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই মামলায় তারেকের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ডের সাজা বহাল রেখে বিচারিক আদালতের করা জরিমানা ৪০ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২০ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছেন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেন এ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা গেছে, তারেক রহমান এমন রাজনৈতিক শ্রেনীর ব্যক্তি যার দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার কথা, তিনি সচেতনভাবে ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমে জড়িয়ে পড়েছেন। তিনি তার রাজনৈতিক উচ্চশ্রেণীর অবস্থান ব্যবহার করে কন্সালটেশেন ফি’র (পরামর্শক ফি) নামে তার সহযোগীর (মামুন) মাধ্যমে ডার্টি মানি (নোংরা টাকা) অর্জন করেছেন। রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে সংগঠিত এ ধরনের দুর্নীতি সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকিস্বরূপ’।
আদালত রায়ে আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক ঢাল ব্যবহার করে অবৈধভাবে এভাবে সম্পদ অর্জনের প্রবণতা বাড়ছে। দেশের কল্যাণ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এখন সময় এসেছে, এ ধরনের রাজনৈতিক সহানুভূতি ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে হওয়া দুর্নীতি রুখে দেওয়া’।
দুর্নীতি চর্চা ও রাজনৈতিক প্রভাব অবধারিতভাবে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে মানি লন্ডারিংয়ের মতো অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ার মতো ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছে, যা পুরো সমাজের ওপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
আদালত বলেন, ‘রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অবৈধভাবে অর্থ অর্জনে অনৈতিক আনুকূল্য নেওয়ার প্রবণতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে বড় ধরনের সুসংঘটিত অর্থনৈতিক অপরাধ যেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে সেজন্য সমাজকে সচেতন হতে হবে, নিন্দা করতে হবে’।
‘মানিলন্ডারিংয়ের মতো অর্থনৈতিক অপরাধে দেশের সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারেক রহমান, যিনি অবৈধ উৎস থেকে উপার্জিত বিপুল পরিমাণ টাকা পাচারের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, সচেতনভাবে তিনি এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এটি নমনীয় দৃষ্টিতে দেখার দাবি রাখে না’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
ইএস/এএসআর