ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘বিনা বিচারে’ দেড় যুগ কারাগারে থাকা চারজনকে হাজির করার নির্দেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
‘বিনা বিচারে’ দেড় যুগ কারাগারে থাকা চারজনকে হাজির করার নির্দেশ

‘বিনা বিচারে’ দেড় যুগ ধরে কারাগারে থাকা আরও চারজনের সন্ধান মিলেছে। তাদেরকে আগামী ০৪ ডিসেম্বর হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ঢাকা: ‘বিনা বিচারে’ দেড় যুগ ধরে কারাগারে থাকা আরও চারজনের সন্ধান মিলেছে। তাদেরকে আগামী ০৪ ডিসেম্বর হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জামিনের অপেক্ষায় প্রায় দেড় যুগ ধরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ওই চারজন হচ্ছেন- চাঁন মিয়া, মকবুল, সেন্টু ও বিল্লাল।

বিষয়টি নজরে আনার পর রোববার (২০ নভেম্বর) এ আদেশ দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ওই চারজনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। প্রতিবেদনটি রোববার আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের আইনজীবী কুমার দেবুল দে ও আইনুন নাহার সিদ্দিকা। এরপর তাদেরকে হাজির করার নির্দেশের পাশাপাশি রুলও জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে বিনা বিচারে দেড় যুগ আটক চার ব্যক্তিকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
 
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর কাশিমুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন ১৭ বছর বিনা বিচারে কারাগারে থাকা ঢাকার সূত্রাপুরের ৫৯, গোয়ালঘাট লেন এলাকার মো. শিপন মিয়া। একইভাবে তার বিষয়টি গত ৩০ অক্টোবর নজরে আনা হলে শিপনকে ০৮ নভেম্বর হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

হাজির করার পর গত ০৮ নভেম্বর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিপনকে জামিন দেন। ২০০০ সালের ০৭ নভেম্বর গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ঢাকা ও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ তে ছিলেন শিপন।
 
এদিকে, ৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিনা বিচারে বন্দি আছেন- এমন লোকের তালিকা চেয়ে দেশের সবগুলো কারাগারে চিঠি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কার্যালয়। এরই মধ্যে ৫৬ বন্দির তালিকা আইজি (প্রিজন্স) কার্যালয়ে পাঠিয়েছে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ।
 
বিনা বিচারে কারাগারে আটক নতুন চারজনের একজন চাঁন মিয়া। গত আঠারো বছর ধরে কারাগারে বন্দি তিনি, যার হাজতি নম্বর ২৮৩৪। ঢাকার শ্যামপুর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে ১৯৯৯ সাল থেকে বিনা বিচারে বন্দি তিনি। এ দেড় যুগে চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হত্যা মামলার কোনো অগ্রগতিই হয়নি। মামলাটি বর্তমান বিচারাধীন ঢাকার পরিবেশ আদালতে।
 
একই ঘটনা মাদারীপুরের মকবুল হোসেনেরও। ৬৬৬ পরিচয়ধারী মকবুল রাজধানীর উত্তরা থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ২০০০ সালে। এরপর থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর মামলাটি আর আলোর মুখ দেখেনি।   ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মকবুলে পক্ষে আইনি লড়াই করারও কেউ ছিলেন না।

মতিঝিলের এজিবি কলোনির সেন্টু কামাল গ্রেফতার হন ২০০১ সালে। সর্বশেষ গত মাসেও তাকে হাজির করা হয়েছিলো ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এ।   কিন্তু দীর্ঘ ১৬ বছরে ৫৯ কার্যদিবস আদালতে হাজির করা হলেও মামলা শেষ হয়নি।
 
মামলা শেষ হয়নি কুমিল্লার বিল্লাল হোসেনেরও। তেজগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় বিল্লাল হোসেন কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন ২০০২ সাল থেকে। তার মামলাটিও বিচারাধীন আছে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৬
ইএস/ এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।