ঢাকা: বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের ওপর আদেশ স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করা হয়েছে। পরে যেকোনো সময়ে এ আদেশ দেবেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত বলেন, ‘এটি সাংবিধানিক বিষয়। আমরা আরও দেখবো। বিষয়টি স্ট্যান্ডওভার রাখলাম’।
পরে রিট আবেদনকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী বলেন, আদালত বিষয়টি ষ্ট্যান্ডওভার রেখেছেন। পরে যেকোনো সময় এটার ওপর আদেশ দেওয়া হবে।
গত ০৩ নভেম্বর হাইকোর্টে রিটটি করেন ইউনুছ আলী আকন্দ।
সোমবার (২১ নভেম্বর) শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
শুনানির পর ইউনুছ আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আদালতে বলেছি-১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে ১১৬ অনুচ্ছেদে অধস্তন আদালতের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব ছিলো সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৪র্থ সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের পরিবর্তে ওই ক্ষমতা দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’।
‘এছাড়াও সংবিধানের ৯৫ (গ) অনুচ্ছেদে আইন তৈরি সাপেক্ষে বিচারপতি নিয়োগের বিধান থাকলেও সংসদে কোনো আইন ছাড়াই দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এটিও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’।
আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, স্পিকার ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে।
এদিকে গত ৩১ অক্টোবর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকের নবম বর্ষপূর্তিতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বাণীতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে’।
‘অন্যদিকে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের ধীরগতির অন্যতম কারণ। ১১৬ অনুচ্ছেদের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি এবং শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে এককভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ‘দ্বৈত শাসনের’ ফলে বহু জেলায় শূন্যপদে সময়মতো বিচারক নিয়োগ প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। এবং বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
ইএস/এএসআর