ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘কিছু প্রসিকিউটর পাবলিক সার্ভিসের পজিশন বোঝেন না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
‘কিছু প্রসিকিউটর পাবলিক সার্ভিসের পজিশন বোঝেন না’

ঢাকা: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউরদের দক্ষতা ও আচরণ নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। কিছু প্রসিকিউটর পাবলিক সার্ভিসের পজিশন বোঝেন না বলেও মন্তব্য করেন।

আপিল বিভাগের এসব মন্তব্য আদালতে দাড়িয়ে শতভাগ সমর্থন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।  

সোমবার (১৫ মে) আমৃত্যু কারাবাসে থাকা মানবতাবিরোধী অপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায়ে থাকা প্রসিকিউটরদের অযোগ্যতার বিষয়টি বাদ দিতে প্রসিকিউটর হায়দার আলীর আবেদনের শুনানিতে এমন মন্তব্য আসে।

সকালে দেওয়া রিভিউ আবেদনের রায়ে সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। উভয়পক্ষের আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচ‍ারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির রায় পুনর্বহাল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আর সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়ে দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন জানিয়েছিলেন সাঈদী। ওই দুই আবেদনের শুনানি একসঙ্গে নেওয়া হয়।

এরপর প্রসিকিউটর হায়দার আলী আবেদনের শুনানি শুরু হয়।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সাঈদীর রায়ের একটি অংশ বাদ দিতে প্রসিকিউটর হায়দার আলী আবেদন করেন। রায়ের যে অংশে বলা হয়েছে, তিনি অকর্মণ্য অপদার্থ। এ সমস্ত মন্তব্য যেন বাদ দেওয়া হয়।
 
সাঈদীর মামলার ঠিকমতো তদন্ত এবং ট্রাইব্যুনালে তথ্য উপস্থাপিত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আদালতে সাঈদীর দাখিল করা এফআইআরের বিষয়ে খবর নিতে আমি দু’বার গিয়েছিলাম পিরোজপুরে ও বরিশালে। কিন্তু সে কাগজপত্র আর পাইনি। আমার বিশ্বাস, সাঈদীর পক্ষের লোকেরা আগে থেকে সরিয়ে  রেখেছেন। সাঈদীর মতো  একটা লোক, তার যে দণ্ড পাওয়া উচিত ছিলো, সেই দণ্ডটা তিনি পেলেন না’।

এ ব্যাপারে আদালতের ওপর দোষ না চাপিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এ ব্যাপারে আদালতের ওপর দোষ দেওয়া যাবে না। প্রসিকিউশনের যেভাবে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করার দরকার ছিলো, সেটি করা হয়নি বলে আজকে আমরা ফাঁসির আদেশ পেলাম না’।

এর আগে প্রসিকিউটর হায়দার আলীর পক্ষে ‍আইনজীবী আমিন উদ্দিন শুনানি করতে গেলে আদালত বলেন, ‘এটি নিয়ে অনেক দূর জল গড়িয়েছেন। কিছু প্রসিকিউটর নন প্র্যাকটিসিং ল’ইয়ার (মামলা পরিচালনায় অনিয়মিত আইনজীবী)। কিছু ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মিটিঙয়ে যান। এগুলো মিস্‌কন্ডাক্ট’।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল দাড়িয়ে বলেন, হান্ড্রেড পার্সেন্ট কারেক্ট।

আদালত আরও বলেন, ‘তারাতো পাবলিক সার্ভেন্ট। পাবলিক সার্ভিসের পজিশন বোঝেন না। যাদের পলিটিক্যাল এজেন্ডা আছে, কিছু প্রসিকিউটর তাদের কাছে যান’।

এরপর সাঈদীর রায়ে প্রসিকিউটরদের নিয়ে পর্যবেক্ষণ বাদ দেওয়ার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।