ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘জনস্বার্থে ক্ষমতাশালীদের বিচারে ভয় নেই বিচারকদের’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
‘জনস্বার্থে ক্ষমতাশালীদের বিচারে ভয় নেই বিচারকদের’

ঢাকা: জনগণের স্বার্থ জড়িত থাকলে সেখানে যতই ক্ষমতাশালী থাকুক না কেন, বিচারকরা বিচার করতে ভয় পায় না।

বিচারকদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আপিল শুনানির এক পর্যায়ে মঙ্গলবার (৩০ মে) এমন মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।  
 
ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসির মতামত উপস্থাপনের এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারকদের থাকার জায়গা নেই।

এই সুপ্রিম কোর্টের একটি প্রশাসনিক ভবন নেই। সুপ্রিম কোর্টের অনেক কর্মকর্তার বসার কক্ষ নেই। অথচ দেশের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের অবদান কোনো অংশেই কম নয়।
 
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি হাজারটা উদাহরণ দিতে পারি, আমাদের বিচার বিভাগ বিচারের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত রেখে চলেছে। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলা গোটা দুনিয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করল। দেশের মানুষ ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করলো। এই সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপেই ওই মামলার জট খুলে গেল।  
 
‘এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে হাজারীবাগের ট্যানারি স্থানান্তারিত হয়েছে। এই শহর দুষণের হাত থেকে রক্ষা পেল। গুলশান ও বারিধারা লেক এবং শীতলক্ষা, বুড়িগঙ্গা সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপেই রক্ষা পেয়েছে। ’
 
তিনি বলেন, আমরা বিচার করি বিচার বিভাগের স্বার্থে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে। দেশের জনগণের স্বার্থে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সব সময় পদক্ষেপ নিয়েছি। জনগণের স্বার্থ জড়িত থাকলে সেখানে যতই ক্ষমতাশালী থাকুক না কেন, বিচারকরা বিচার করতে ভয় পায়না।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়।
 
সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
 
এ রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।
 
এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন।
 
গত ০৮ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আপিল শুনানির ৬ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করেন আপিল আবেদনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা এবং রিট আবেদনের পক্ষে মনজিল মোরসেদ। শুরুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় পড়ে শোনান মুরাদ রেজা।
 
পরে ১০জন অ্যামিকাস কিউরি এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু তার মতামত উপস্থাপন করেন।
 
এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য রয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।