ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের ওসিকে হাইকোর্টে তলব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৭
 লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জের ওসিকে হাইকোর্টে তলব

ঢাকা: লক্ষ্মীপুরে মাটি কাটা নিয়ে বিবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সালিশ বসিয়ে এক শ্রমিককে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় চন্দ্রথানার ওসি ও দত্তপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
 
 

এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে আগামী ৩ জুলাই (সোমবার) তাদেরকে হাইকোর্টে হাজির হতে হবে।
 
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (২১ জুন) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।


 
পাশাপাশি সালিশে নির্যাতিত শ্রমিকের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
গত ১৮ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে 'এ কেমন বিচার!' শিরোনামে  এ প্রতিবেদন প্রকাশিত  হয়।
 
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মাটি কাটা নিয়ে বিবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সালিশ বসিয়ে শ্রমিক নূরুল আমিনকে (৫২) নাকে খত দেওয়ানো হয়েছে। তাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করা হয়েছে। দুই দফায় অভিযোগকারী ও তার স্ত্রীর পা ধরে ক্ষমা চাওয়ানো হয়েছে।
 
‘ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের নির্দেশে স্ত্রী, সন্তান ও শতাধিক মানুষের সামনে গ্রাম পুলিশ তাকে লাঠিপেটা করে। এরপর তাকে নাকে খত দিতে বাধ্য করা হয়। সালিশের দুইদিন পর জরিমানার ১০ হাজার টাকা আদায় করা হয় তার কাছ থেকে। এ অমানবিক ঘটনার দৃশ্য ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দুইদিন ধরে এলাকায় তোলপাড় চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বড় আউলিয়া গ্রামে। ’
 
‘নূরুল আমিন ও তার পরিবারের অভিযোগ, দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসানুল কবির রিপন বিচারের নামে অমানবিক এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। আহসানুল কবির জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক। সালিশের ঘটনার পর লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না নূরুল আমিন। ঘর থেকে বেরোলেই লোকজন অপমানজনক কথাবার্তা বলে। ছেলেমেয়েরাও ঘর থেকে বের হতে চায় না।
 
‘রোজা শুরুর আগে বড় আউলিয়া গ্রামের নূরুল আমিনের সঙ্গে একই গ্রামের মো. শহিদের মাটি কাটা নিয়ে বাদানুবাদ ও হাতাহাতি হয়। তারা দু’জনই মাটি কাটা শ্রমিক। শহিদ সামান্য আহত হন। পরে অবশ্য নূরুল আমিন তার চিকিৎসা করান। ওই ঘটনায় শহিদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করেন। চেয়ারম্যান দ্বিতীয় রোজার দিন দুপুরে বড় আউলিয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক শাহজাহানের দোকানের সামনে সালিশ বসান। গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে বাড়ি থেকে নূরুল আমিনকে ধরে আনা হয়। সবার সামনে নূরুল আমিন দোষ স্বীকার করে শহিদ ও তার স্ত্রীর পা ধরে ক্ষমা চান। পরে চেয়ারম্যান ২০টি বেত্রাঘাত ও নাকে খত দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। কাকুতি-মিনতি করেও রেহাই পাননি তিনি। গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর আলম তাকে লাঠিপেটা করেন। ১০-১২টি লাঠির ঘার পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীরকে থামিয়ে নূরুল আমিনকে নাকে খত দিতে বাধ্য করেন। পরে আবার শহিদ ও তার স্ত্রীর পা ধরে ক্ষমা চান তিনি। ’
 
এ প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তাছেব হোসাইন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৭
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।