ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ডেসটিনির জব্দকৃত অর্থের হিসাব চেয়েছেন আপিল বিভাগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
ডেসটিনির জব্দকৃত অর্থের হিসাব চেয়েছেন আপিল বিভাগ

ঢাকা: ডেসটিনির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জব্দকৃত অর্থের পরিমাণ জানতে চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে এ হিসাব দাখিল করতে হবে।

রোববার (১৬ জুলাই) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
 
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

ডেসটিনির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।

এর আগে গত ১০ জুলাইয়ের আদেশে ডেসটিনির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কতো টাকা জমা আছে, তার প্রতিবেদন (ব্যাংক স্টেটমেন্ট) ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

ডেসটিনির আইনজীবী জানান, ডেসটিনির অ্যাকাউন্ট জব্দ থাকায় রোববার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের হিসাব বিবরণী দেয় নাই। এরপর আদালত দুদকের কাছে তা জানতে চেয়েছেন।

গত বছরের ১৩ নভেম্বর ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। জামিনের আদেশে বলা হয়েছিল, ৩৫ লাখ গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা অথবা নগদ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছয় সপ্তাহের মধ্যে জমা দিলে জামিন পাবেন তারা।

পরে ওই আদেশের সংশোধনী চেয়ে আবেদন জানান রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসাইন। আবেদনে কারাগারে থাকায় এ শর্তপূরণ সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেন তারা।

এ আবেদনেরই শুনানি শেষে ১০ জুলাই ব্যাংক স্টেটমেন্ট তলব করেন সর্বোচ্চ আদালত।


২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনসহ ডেসটিনি গ্রুপের ২২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দু’টি মামলা করে দুদক।  

ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেশন (এমএলএম) ও ট্রি-প্ল্যানটেশন প্রকল্পের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ৩ হাজার ২৮৫ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দু’টি করা হয়।

বর্তমানে এ মামলায় দু’জনই কারাগারে রয়েছেন।

গত বছরের ২০ জুলাই শর্তসাপেক্ষে রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসাইনকে জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে দুদকের আবেদনে তা স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগ। এ আবেদনের শুনানির এক পর্যায়ে আত্মসাৎ করা টাকা জমা দেওয়ার কথা বলেন সর্বোচ্চ আদালত।

সে অনুসারে গত বছরের ১৩ নভেম্বর ডেসনিটির পক্ষ থেকে গাছ বিক্রি করে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। ওইদিন হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানানো হয় যে, তাদের কাছে ৩৫ লাখ গাছ আছে। প্রতিটি গাছ আট হাজার টাকায় বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে পারবেন তারা।

এর  প্রেক্ষিতে জামিনের শর্ত পূরণে আপিল বিভাগ দুই আসামি যে কারাগারে আছেন, সেখানে তাদের সঙ্গে গাছ বিক্রির সকল কাগজপত্রে স্বাক্ষর ও আলোচনার সুযোগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনের সিইও ড. শামসুল হক ভূঁইয়া এমপির তত্ত্বাবধানে সব কাজ সম্পন্ন হবে।  

যদি গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিতে না পারেন, তাহলে নগদ ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দেবেন তারা। এর অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে। এরপর যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, যাচাই করে তাদের কাছে টাকা হস্তান্তরের পর জামিনে মুক্তি পাবেন দুই কর্মকর্তা।  

কিন্তু কয়েক মাস পরে এ আদেশ সংশোধন চেয়ে আবেদন জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
ইএস/এমজেএফ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।