ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আদুরী নির্যাতন মামলার রায় মঙ্গলবার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
আদুরী নির্যাতন মামলার রায় মঙ্গলবার

ঢাকা: শিশু গৃহকর্মী আদুরীকে (১১) নির্যাতন করে মৃত ভেবে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার মামলার রায় মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দেবেন ঢাকার ৩নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।

সকালে ট্রাইব্যুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার চার বছর আগের আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।      

২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন ডাস্টবিন থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরীকে।

উদ্ধারের সময় তার শরীরে ছিলো অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন। দীর্ঘদিন মারধর, গরম খুন্তি ও ইস্ত্রির ছ্যাঁকা, ব্লেড দিয়ে শরীর পোঁচানো, মাথায় কোপ, মুখে আগুনের ছ্যাঁকা, খেতে না দেওয়াসহ নানা নির্মম-নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়ে মৃত ভেবে ওই ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী নদী ও তার পরিবারের লোকজন।

রায় শুনতে পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের পূর্ব জৈনকাঠি গ্রামের বাড়ি থেকে সপরিবারে ঢাকায় এসেছে বর্তমানে ১৪ বছরের কিশোরী আদুরী। মা সাফিয়া বেগম, মামা মামলার বাদী নজরুল চৌধুরীসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন উত্তর বাড্ডায় আদুরী দুলাভাইয়ের বাসায় অবস্থান করছেন। তারা সবাই রায় শুনতে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত থাকবেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন নজরুল চৌধুরী।

মামলার দুই আসামির মধ্যে গ্রেফতারকৃত গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হবে। জামিনে আছেন অপর আসামি নদীর মা ইশরাত জাহান।

উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে গত ০৯ জুলাই রায়ের দিন ১৮ জুলাই ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

বাদীপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আদুরীর পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট ফাহমিদা আক্তার রিংকি।

প্রায় দেড় মাস আদুরীকে চিকিৎসা দেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। যখন তাকে রিলিজ দেওয়া হয়, তখনও সে ভালোভাবে কথা বলতে পারতো না। শরীর ছিলো প্রচণ্ড দুর্বল। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওই বছরের ০৭ নভেম্বর আদুরী চলে যায় পটুয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে।

এখনকার ১৪ বছরের আদুরী (ফাইল ফটো)অ্যাডভোকেট রিংকি গত ০৯ জুলাই মামলার রায়ের দিন আদুরীকে ঢাকায় আনার কথা জানিয়েছিলেন।

নির্যাতনের ঘটনায় তিনদিন পর ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা করেন আদুরীর মামা নজরুল চৌধুরী।  

তবে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনিকে বাদ দেওয়া হয়। তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।

মামলার দিনই ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় নদীকে। গ্রেফতারের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরীকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ওই বছরের ০১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। আদুরীও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেয়।

২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের এসআই কুইন আক্তার। ২০১৪ সালের ০৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।

এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।