ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘মন্ত্রীর দরকার নেই, সুপ্রিম কোর্টই রুলস্‌ করতে পারেন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৭
‘মন্ত্রীর দরকার নেই, সুপ্রিম কোর্টই রুলস্‌ করতে পারেন’

ঢাকা: নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা তৈরি করতে আইন মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রীর দরকার নেই। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ এ বিধিমালা করার পর ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে গেজেট প্রকাশের আবেদন জানিয়েছেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম।

মাসদার হোসেন মামলার আবেদনকারী পক্ষে রোববার (০৬ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

দুই সপ্তাহ পরে আবেদনটির শুনানি হবে বলে আদেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।

পরে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, ‘১৭ বছর আগে একই আবেদন করেছিলাম। তখন প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল রায়ে বলেছিলেন, ‘রুলস প্রণয়নে একটি আইনি বাতাবরণ থাকা দরকার। ১৭ বছর পরেও এসে আবেদন করে বলেছি, বিচারপতি মোস্তফা কামালের ওই রায়ের অংশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) করতে হবে। কারণ, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ মতে বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনে রত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে’।

‘এজন্য সুপ্রিম কোর্ট এ রুলস প্রণয়ন করে শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে দেখিয়ে এলেই হয়। এখানে মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের দরকার নেই’।

এর আগে গেজেট প্রকাশে ফের চার সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। শুনানি শেষে দুই সপ্তাহ সময় দেন আপিল বিভাগ।

১৯৯৯ সালের ০২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেনের মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের এ নির্দেশনার পর গত বছরের ০৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।

গত বছরের ২৮ আগস্ট শুনানিকালে আপিল বিভাগ খসড়ার বিষয়ে বলেন, ‘শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিলো ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী’।

এর পরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। গত ১৬ জুলাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ সংক্রান্ত গেজেট শিগগিরই প্রস্তুত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে ফের ২৭ জুলাই বিকেলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খসড়াটি হস্তান্তর করেন আইনমন্ত্রী।

কিন্তু গত ৩০ জুলাই সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আইনমন্ত্রীর দেওয়া খসড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলো। তিনি খসড়া দিয়ে গেলেন। আমি তো খুশি হয়ে গেলাম। যদিও খুলে দেখিনি। কিন্তু এটা কী!’

এরপর বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। কিন্তু অসুস্থতা দেখিয়ে গত বৃহস্পতিবার (০৩ আগস্ট) বৈঠকে আসেননি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।