ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বাংলাদেশ-ভারত ৫টি রুটের বাস অপারেটর নিয়োগে স্থিতাবস্থা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
বাংলাদেশ-ভারত ৫টি রুটের বাস অপারেটর নিয়োগে স্থিতাবস্থা

ঢাকা: ভাড়া নির্ধারণ না করে দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ-ভারত ৫টি রুটে বাস অপারেটর নিয়োগে দেওয়া টেন্ডার প্রক্রিয়ার ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট।

ওই টেন্ডার কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন।

সঙ্গে ছিলেন এ আর এম কামরুজ্জামান, অর্পণ চক্রবর্তী ও শুভজিত ব্যানার্জি। বিআরটিসি’র পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান।

পরে এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইনের ১৫ ধারা অনুসরণ না করেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। তাই ওই টেন্ডার প্রক্রিয়ার ওপর একমাসের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এখন এ বিষয়ে আর কোনো কার্যক্রম চালানো যাবে না।

হাইকোর্টে আবেদনটি জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক বাস রুটে সরকার টু সরকার সম্পাদিত প্রটোকলের শর্ত অনুসারে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে নাস্তাসহ ১১ ডলার (প্রায় ৯২০ টাকা) ভাড়া আদায়ের কথা থাকলেও সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসিসহ সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা হারে ভাড়া আদায় করছে। এতে এ রুটে প্রতিদিন যাতায়াতকারী প্রায় ৮ হাজার যাত্রীর স্বার্থ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’।

‘এ বাস রুটটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ায় পরবর্তীতে আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা, ঢাকা-খুলনা-কলকাতা-ঢাকা, ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা, ঢাকা সিলেট-শিলং-গোয়াহাটি-ঢাকা রুট চালু হয়। এসব রুটে এসি/নন এসি বাসের ভাড়া নির্ধারিত না থাকায় অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে’।

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গত ০৪ জুলাই পত্রিকায় প্রকাশিত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে ৫টি রুটে অসম প্রতিযোগিতামূলকভাবে অপারেটর নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণ না করে এ বিজ্ঞপ্তি চলমান ভাড়া নৈরাজ্যকে আরো বেশি উস্কে দেবে। আগে ৫টি রুটে উভয় দেশের মধ্যে সম্পাদিত ১৯৯৯ সালের প্রটোকলের শর্তানুসারে ভাড়া নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারির পর টেন্ডার কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে’।

‘এজন্য গত ১৩ জুলাই সরকারকে চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু সরকার তার নিষ্পত্তি না করায় হাইকোর্টে রিট করি’।

ওই রিটের পর গত ২৩ জুলাই ভাড়া নির্ধারণ না করে দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ-ভারত ৫টি রুটে বাস অপারেটর নিয়োগে দেওয়া টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ‘আন্তর্জাতিক বাস রুটে প্রটোকলের শর্ত লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে’- সরকারের কাছে যাত্রী কল্যাণ সমিতির করা আবেদনটি একমাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।

ব্যারিস্টার আলতাফ হোসেন বলেন, হাইকোর্টের ওই আদেশের পরে গত ০২ আগস্ট চিঠি দিয়ে আবেদন নিষ্পত্তির কথা মোজাম্মেল হককে জানায় বিআরটিসি।

এরপর গত ৩০ আগস্ট টেন্ডার ওপেনিং কমিটির সভা করে বিআরটিসি। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে টেন্ডারে অংশগ্রহণকারীদের দু’টি করে বাস নিয়ে বিআরটিসি’র মতিঝিল ডিপোতে হাজির থাকতে বলা হয়।

কিন্তু আইন অনুসারে ভাড়া নির্ধারণ না করে এ ধরনের টেন্ডার প্রক্রিয়া সঠিক নয় বলে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন জানান মোজাম্মল হক। আদালত আবেদনের শুনানি নিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ার ওপর একমাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।

এ আদেশের ফলে এখন টেন্ডার প্রক্রিয়ার কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না বলেও জানান আলতাফ হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।