ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে সময়ের আবেদন কার্যতালিকায়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৭
বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে সময়ের আবেদন কার্যতালিকায়

ঢাকা: বহুতল ভবন ভাঙতে আরও এক বছর সময় চেয়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) করা আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায়  এসেছে।

দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার নেতৃত্বে এক নম্বর আপিল বেঞ্চে আগামী রোববারের (০৮ অক্টোবর) কার্যতালিকায় ১২ নম্বরে রয়েছে আবেদনটি।  
 
গত ২৩ আগস্ট এ আবেদন করেছিলো বিজিএমইএ।

এরপর ১১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আবেদনটির শুনানির জন্য ০৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু  বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় আবেদনটি দেখা যায়নি।

তবে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ০৮ অক্টোবরের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আবেদনটি ১২ নম্বর ক্রমিকে দেখা গেছে।     

আবেদনের সময় বিজিএমইএ’র আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম বলেন, ভবন থেকে সরতে আরও এক বছর সময় চেয়েছে বিজিএমইএ। কারণ, রাজউক জমি দিয়েছে, এখন সব কিছু প্রক্রিয়াধীন আছে। তাই সময় চেয়ে আবেদনটি করা হয়েছে।
 
গত ৩১ আগস্ট সকালে বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ভবন থেকে সবকিছু সরাতে তো অনেক সময়ের প্রয়োজন। বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন। তাই সর্বোচ্চ আদালতে সময় চেয়েছি’।
 
সর্বশেষ গত ১২ মার্চ ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে ছয়মাসের সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
 
ওইদিন আদালতে বিজিএমইএ’র পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম।
 
১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ০৮ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করেন সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে এটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ানবাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ি খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ০২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওইদিনই প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মনির উদ্দিন।
 
পরদিন ০৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

২০১১ সালের ০৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে।

একই বছরের ০৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে হাইকোর্টের রায় ছয়মাসের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।

পরবর্তী সময়ে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ান সর্বোচ্চ আদালত।

হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ০২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়।

গত বছরের ০৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রিভিউ আবেদন জানায় বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।

গত ০৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কতো সময় লাগবে- তা ০৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিলেন আপিল বিভাগ। ওইদিন প্রধান
বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে ভবন ভাঙার রায় বহাল রাখেন।

পরে বিজিএমইএ’র তিন বছরের সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১২ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ভবন ভাঙতে ছয়মাস সময় দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।