ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ভবন ভাঙতে আরও সাতমাস সময় পেল বিজিএমইএ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৭
ভবন ভাঙতে আরও সাতমাস সময় পেল বিজিএমইএ সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকা: বহুতল ভবন ভাঙতে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতিকে (বিজিএমইএ) আরও সাত মাস সময় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এটি তাদের জন্য শেষ সময় বলেও উল্লেখ করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।

আরও এক বছর সময় চেয়ে বিজিএমইএ’র করা আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (০৮ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় এ আদেশ দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।

সকালে আদালতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বিজিএমইএ’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম।

আদেশের সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিজিএমইএ’র আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকীকে বলেন, ‘আমরা আরও সাতমাস সময় দিলাম। এটিই শেষ সময়। এর মধ্যেই যা করার করবেন, সেটি আপনাদের বিষয়। এরপরে আর কোনো সময় দেবো না’।

সর্বশেষ তিন বছরের সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ ভবন ভাঙতে বিজিএমইএকে ছয়মাসের সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
 
ওই সময় শেষ হওয়ায় গত ২৩ আগস্ট আরও এক বছর সময় চেয়ে এ আবেদন জানিয়েছিলো বিজিএমইএ। গত ১১ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে পাঠিয়ে আবেদনটির শুনানির দিন ০৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন চেম্বার আদালত। পরে রোববারের কার্যতালিকায় আসে সেটি।

১৯৯৮ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণ শেষ হলে ২০০৬ সালের ০৮ অক্টোবর ভবনটির উদ্বোধন করেন সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে এটি বিজিএমইএ’র প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কিন্তু রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই কারওয়ানবাজার সংলগ্ন বেগুনবাড়ি খালে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে ২০১০ সালের ০২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওইদিনই প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মনির উদ্দিন।
 
পরদিন ০৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

২০১১ সালের ০৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলের রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেন বিজিএমইএকে।

একই বছরের ০৫ এপ্রিল বিজিএমইএ’র আবেদনে হাইকোর্টের রায় ছয়মাসের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।

পরবর্তী সময়ে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ান সর্বোচ্চ আদালত।

হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ০২ জুন তা খারিজ হয়ে যায়।

গত বছরের ০৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হওয়ার পর রিভিউ আবেদন জানায় বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ।

গত ০৫ মার্চ বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কতো সময় লাগবে- তা ০৯ মার্চের মধ্যে আদালতে আবেদন করতে বলেছিলেন আপিল বিভাগ। ওইদিন প্রধান
বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে ভবন ভাঙার রায় বহাল ও ভবন ভাঙতে ছয়মাস সময় দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।