ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাইকোর্টে হাজিরা দিয়েছেন ম্যাপললিফের অধ্যক্ষ আলী কারাম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০১৭
হাইকোর্টে হাজিরা দিয়েছেন ম্যাপললিফের অধ্যক্ষ আলী কারাম

ঢাকা: আদালত আদেশের পরও ধানমন্ডির আবাসিক এলাকা থেকে ম্যাপললিফ স্কুল না সরানোয় আদালতের তলবে হাজিরা দিয়েছেন স্কুলটির অধ্যক্ষ আলী কারাম রেজা।

মঙ্গলবার (ডিসেম্বর ০৫) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি  দিয়ে এ বিষয়ে শুনানির জন্য পরবর্তীতে সময় নির্ধারণ করেছেন।

আদালতে অধ্যক্ষ আলী কারাম রেজার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন।

আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ১২ ডিসেম্বর হাজিরা ছিলো। কিন্তু ওই  সময় আলী কারাম রেজা দেশে থাকবেন না তাই আবেদন করে আজ হাজিরা দিয়েছেন। আদালতে দেওয়া ব্যাখ্যায় তারা বলেছেন-একটি ক্যাম্পাস তারা সরিয়েছেন।   আমি বলেছি একটি নয় সবগুলো সরাতে হবে। এরপর আদালত তাকে অব্যাহতি দিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনানির জন্য অবকাশকালীন ছুটির এক সপ্তাহ পর সময় নির্ধারণ করেছেন।   

ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য রক্ষার নির্দেশনা চেয়ে সেখানকার দুই বাসিন্দা এম এ মাসুদ এবং এম এ মতিন হাইকোর্টে ২০১১ সালের রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি আমলে নিয়ে ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন। একই সঙ্গে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় নতুন স্কুল, কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও অনুমোদনের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১২ সালের ১১ জুন এ রায় দেন আদালত। রায়ে তিন বছরের মধ্যে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা থেকে অননুমোদিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। তবে ইতিপূর্বে বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করায় ধানমন্ডি-২, ২৭ নম্বর সড়ক,সাত মসজিদ ও মিরপুর সড়কের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ নির্দেশনায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনাল। কিন্তু ২০১৬ সালের ০১ আগস্ট সে আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

কিন্তু রায় কার্যকর না হওয়ায় পরবর্তীতে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আইনজীবী আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে ৩১ মে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৪ জুলাই ম্যাপললিফের অধ্যক্ষকে তলব করেন। পাশাপাশি রুলও জারি করেন। রুলে আদালত অবমাননার দায়ে কেন তাকে অভিযুক্ত করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।  

৩০ নভেম্বর মনজিল মোরসেদ বলেন, জুলাই মাসে তৎকালীন অধ্যক্ষ আদালতে বলেছেন, তিনি দায়িত্বে নেই। এখন দায়িত্বে তার ছেলে আলী কারাম রেজা। এরপর আলী কারামকে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্দেশ দেন।

মূল মামলায় হাইকোর্টর রায়ের পর এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা থেকে সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিতে রাজউকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ধানমন্ডি এলাকায় ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ১১টি শাখা রয়েছে। তিন বছরের মধ্যে স্কুলের শাখাগুলো একত্র করে অন্যত্র সুবিধাজনক জায়গায় সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। শাখাগুলো স্থানান্তর না করা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব লোকবলের মাধ্যমে যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় ভবিষ্যতে সিটি করপোরেশন বা রাজউককে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন না দিতে বলা হয়েছে।

আপিল বিভাগের রায়ের পর মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, ২০১৫ সালে তিন বছর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখন যেহেতু আপিল বিভাগে আবেদন খারিজ হয়ে গেছে তাই যত দ্রুত সম্ভব আবাসিক এলাকার বাণিজ্যিক স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৭
ইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।