উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ তথা রাষ্ট্রপতি বা আইনমন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া কোনো কিছুই করতে পারবে না।
বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল ওই গেজেট উপস্থাপনের সময় এমন মন্তব্য আসে সর্বোচ্চ আদালত থেকে।
দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞায় নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গেজেটটি গ্রহণ করে আদেশ দেন।
আদালত বলেন, মাজদার হোসেন মামলায়ই আপিল বিভাগ রুলস তৈরি করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী এর আগেও রুলস তৈরি হয়েছে। গেজেট জারি হয়েছে।
এ সময় মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম বলেন, এই গেজেট নিয়ে কথা বলতে চাই।
জবাবে আদালত বলেন, অবশ্যই বলবেন। রুলস এ কি আছে সেটা দেখতে চাই। অন্য কোনো কিছু থাকলে তা তো যেকোনো সময় পরিবর্তন করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বলা হচ্ছে, আমরা সব দিয়ে দিয়েছি। কোথায় দিয়েছি, তা দেখান। গণমাধ্যমে উল্টাপাল্টা লেখা হচ্ছে।
আদালত বিধিমালার বিভিন্ন ধারা অ্যাটর্নি জেনারেলকে পড়তে বলেন। সে অনুসারে অ্যাটর্নি জেনারেল ধারাগুলো উপস্থাপন করেন।
অ্যাটর্নি জেনারেলের উপস্থাপনের ফাঁকে ফাঁকে আদালত বলেন, দেখুন সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করার বিধান করা হয়েছে। দেখুন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জায়গায় সুপ্রিম কোর্টের নাম ঢুকিয়েছি। আগে সুপ্রিম কোর্টের নাম ছিল না। সবখানে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করার কথা বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া অনুসন্ধান করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া সরকার কিছুই করতে পারবে না। অথচ পত্রিকায় লেখা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট সব দিয়ে দিয়েছে।
বিধিমালার ২৯ নম্বর ধারা পড়ার সময় আদালত বলেন, এটা তো আরো মারাত্মক। ২৯ নম্বর ধারা দেখুন। সেখানে বলা আছে, কোনো বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ প্রাধান্য পাবে। আমরা ৫ জন (আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতি) বসলাম। আমরা কি এতই বোকা? আমরা কি নবিস বিচারক? বলা হচ্ছে আমরা নাকি সব শেষ করে দিয়েছি।
আদালত বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো প্রস্তাব দিলেও সুপ্রিম কোর্ট পরামর্শ না দিলে কিছু করতে পারবে না উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ। কোনো কিছু করতে হলে আমাদের (সুপ্রিম কোর্ট) পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপে অবশ্যই সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সুপ্রিমেসি তো সুপ্রিম কোর্টেরই থাকলো।
পরে ব্যারিস্টার আমীর বলেন, সুপ্রিম কোর্ট গেজেট গ্রহণ করার পর আমার আর কিছুই বলার থাকে না। এরপর আদালত আদেশ দেন।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাজদার হোসেন মামলায় (বিচার বিভাগ পৃথককরণ) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হয়। বুধবার সে গেজেট গ্রহণ করে আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
ইএস/এসএইচ