ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

২২ মাসের শিশুকে কিভাবে নিলো?

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৮
২২ মাসের শিশুকে কিভাবে নিলো?

ঢাকা: ২২ মাসের শিশু মৌসুম গাইন নীলকে হাজিরে আদেশ এক সপ্তাহের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করেছেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে নীলকে হাজির করতে হাইকোর্টের আদেশ পৌঁছেছে কিনা তা জানাতে হবে।

রোববার (০৭ জানুয়ারি) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।

  

স্বামী-স্ত্রী দুইজন দুই ধর্মের অনুসারী। বিয়ের পর স্ত্রীর ধর্মগ্রহণ করেন স্বামী। কিন্তু স্বামীর পরিবার বিয়ে মেনে নেয়নি। এর মধ্যে তাদের কোলজুড়ে আসে একটি সন্তান, যার নাম রাখা হয় মৌসুম গাইন নীল।

নিজ পরিবারকে দেখানোর কথা বলে শিশুটির দাদি তাকে নিয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন দেখা পাননি মা ফরিদা ইয়াসমিন। এরপর বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়ে আদালতের দ্বারস্ত হন ফরিদা ইয়াসমিন।

২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর হাইকোর্ট শিশুটিকে ২০১৮ সালে ৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির করতে তার চাচা ও দাদিকে নির্দেশ দেন।

রোববার আদালত আইনজীবীকে বলেন, শিশুটিকে হাজির করা হয়েছে কিনা? জবাবে ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, না। তার জন্ম হয়েছিলো ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি।

আদালত বলেন, বাবা কোথায়? আইনজীবী বলেন, বাবার কোনো ট্রেস (সন্ধান) নেই। সম্ভবত শিশুটিকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিশুর দাদি বলেছে- ‘আমি শিশুকে দেবো না, যা হওয়ার তাই হোক’।

আদালত ফের জানতে চান বাবা-মায়ের কাছ থেকে ২২ মাসের শিশুকে কিভাবে নিলো?

জবাবে আইনজীবী বলেন, বাড়ি হচ্ছে খুলনায়। কিন্তু নীলের বাবা (নিউটন গাইন ওরফে লিটন হোসেন) ঢাকার ডেমরায় চাকরি করতের একটি এনজিওতে। নীল জন্ম নেওয়ার পর প্রায়ই তার চাচা ও দাদি শিশুটিকে দেখার কথা বলে নিয়ে যেতো। এ সুযোগে গত বছরের এপ্রিলে তাকে নিয়ে আর ফেরত দেননি। এরপর শিশুটির বাবারও খবর পাওয়া যায়নি। চাকরিও করছে না।

এরপর আদালত বলেন, হাজিরের আদেশ পৌঁছছে কিনা এটা জানাতে হবে। আগামী রোববার পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার রাখা হলো।   

এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, নীলের মাকে ফোনে নীলের দাদি বলেছে, ‘আমি শিশুকে দেবো না, যা হওয়ার তাই হোক’। নীলের মা এটাও শুনেছে যে, তাকে (নীল) সম্ভবত ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।  
 
গত ২০ ডিসেম্বর নীলের মা ফরিদা ইয়াসমিন মনি বলেন, আমার সন্তানের নাম মৌসুম গাইন নীল। তার বাবার পরিবার আমাদের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। বাচ্চা হওয়ার পর প্রায়ই ওর বাবা নীলকে দাদির বাড়ি নিয়ে যেতো। একপর্যায়ে নেওয়ার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বাচ্চাকে আর ফেরত দেয়নি। এমনকি স্বামীও আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। এ ঘটনার সুরাহা করতে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কাছে দারস্ত হয়ে কোনো প্রতিকার পাইনি। পরে আমি হাইকোর্ট রিট করি।

একইদিন আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, শিশু মৌসুম গাইন নীলকে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল তার দাদি ও চাচা এসে নিয়ে যায়। এরপর আর তাকে ফেরত না দেওয়ায় আজ হাইকোর্টে হেবিয়াস করপাস রিট দায়ের করি।

আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, খুলনার পুলিশ কমিশনার, সোনাডাঙ্গা থানার ওসি, দাকোপ থানার ওসি, শিশুর চাচা রিপন, রিপনের মা সুষমা গাইনকে বিবাদী করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৮
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।