তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, তাদের কোনো সমন্বয়হীনতা নাই।
বুধবার (ফেব্রুয়ারি ২৮) সুপ্রিম কোর্টে নিজ নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তারা।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ন্যাশনাল জাস্টিস কো-অর্ডিনেশন কমিটির (এনজেসিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, বিচার বিভাগ নিজস্ব আইন-কানুন ও গতিতে চলে। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। আইনজীবীদের ভুলের কারণে খালেদা জিয়া আজ জেলে। তার আইনজীবীরা আইনি প্রক্রিয়ায় না লড়ে বরং সরকারকে দোষারোপ করে যাচ্ছেন।
বুধবার জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘এ মামলায় কোনো রকম ত্রুটি হচ্ছে না। বরং অতীতে আমরা কখনো দেখি নাই, যে জামিন আবেদনের শুনানি করে মুলতবি রাখে নথির জন্য। এটা একটা নতুন জিনিস দেখলাম। এটা সরকারপক্ষ অথাৎ অ্যাটর্নি জেনারেল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বক্তব্য রেখে আদালতকে প্রভাবিত করেছেন এবং আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য মোতাবেক নথি আসা পর্যন্ত আদেশটি স্থগিত রেখেছেন। জামিনের ওপর কোনো আদেশ দেন নাই। ’
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর চিন্তা করা উচিত, বোঝা উচিত, এ মামলাটিতে আমাদের যে তিনজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আছেন খন্দকার হোসেন, আব্দুর রেজাক খান এবং এ জে মোহাম্মদ আলী। তারা তিনজনই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তাদের তিনজনকে দায়িত্ব দিয়েছি। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমন্বয়ের মাধ্যমে। এখানে আমাদের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নাই, তারা আইনগতভাবে মোকাবেলা করছেন। ’
নিম্ন আদালতের নথি নিয়ে তিনি বলেন, ‘নথিতো ইতিমধ্যে আসা উচিত ছিলো। আমরা মনে করি সরকার যদি হস্তক্ষেপ না করে, বিলম্ব না ঘটনায় তাইলে আজকের মধ্যে এ নথি এখানে এসে পৌঁছবে। ’
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের ব্যর্থতার দায় আমাদের ওপর চাপাচ্ছেন। আমাদের খামোখা দোষী করছেন । এটা খুব দুঃখজনক। এই মামলায় নিম্ন আদালতের নথি কখন আসবে না আসবে এই ব্যাপারে তো আমরা কিছুই জানি না। এটা আদালতের বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই। খালেদা জিয়ার মামলায় যে জামিন চাইতে গিয়েছিলেন, সেখানে যে সমস্ত বক্তব্য রেখেছি সেটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। সবই ছিলো আইনগত বক্তব্য। ’
তিনি বলেন, ‘সাজা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে যাবেন এটাতো কল্পনা করা ঠিক না। ওনারা আদালতের কাছে এসেছেন, আদালত যখন মনে করেন জামিন দেবেন। তাদের বক্তব্য তারা পেশ করেছেন। আমাদের বক্তব্য আমরা পেশ করি। আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম তারা নিজেদের ব্যর্থতা আমাদের ওপর কেন চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা আইনমন্ত্রীও বলেছেন। যতরকম ভুল তার (খালেদা জিয়া) আইনজীবীরা করছেন। তার জন্য আমাদের দায়ী করা চলে না। ’
মাহবুবে আলম বলেন, ‘অনেক আইনজীবী থাকলে কো-অপারেশনের অভাব হয় এবং এটাই আমি লক্ষ্য করেছি। ’
খালেদার আইনজীবীদের ব্যর্থতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে এতিমদের টাকা যে আত্মসাৎ হয়ে গেছে, এ জিনিসটি বললেই ওনারা রেগে যান। এটা তো এক বড় ব্যর্থতা। আইনজীবীদের সাধারণ চিন্তা চেতনা নিয়ে মক্কেলের পক্ষে কাজ করতে হবে। সেখানে আবেগতাড়িত হলে চলবে না। নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছে আপিলে সেটা বহাল থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। ’
নথি পাঠানোর বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘নথি পাতায় পাতায় চেক করে পাঠাতে হয়। এটা আদালতের বিষয়। সরকারের কি হাত আছে এতে?’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
ইএস/এসএইচ