ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শহিদুলকে নির্যাতন করা হয়েছে কি না তা পরীক্ষার নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৮
শহিদুলকে নির্যাতন করা হয়েছে কি না তা পরীক্ষার নির্দেশ

ঢাকা: আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে ‘হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতন (নিবারণ) আইন’ এর ২(৬) ধারার বর্ণিত শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে সোমবারের মধ্যে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতি ‍এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  
বৃহস্পতিবার (০৯ আগস্ট) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।


 
আদালতের আদেশ অনুসারে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের পর এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
 
আইনটির ২(৬) ধারায় বলা হয়ছে, ‘নির্যাতন’ অর্থ কষ্ট হয় এমন ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন; এতদ্ব্যতীত-(ক) কোনো ব্যক্তি বা অপর কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য অথবা স্বীকারোক্তি আদায়ে;
 
(খ) সন্দেহভাজন অথবা অপরাধী কোনো ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদানে;
 
(গ) কোনো ব্যক্তি অথবা তাহার মাধ্যমে অপর কোনো ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখানো;
 
(ঘ) বৈষম্যের ভিত্তিতে কারো প্ররোচনা বা উস্কানি, কারো সম্মতিক্রমে অথবা নিজ ক্ষমতাবলে কোনো সরকারি কর্মকর্তা অথবা সরকারি ক্ষমতাবলে এইরূপ কর্মসাধনও নির্যাতন হিসেবে গণ্য হইবে।
 
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে পাঠাতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে করা রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন ১৩ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি মূলতবি রাখা হয়েছে।
 
হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ড. কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট ইদ্রিসুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
 
শুনানিতে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রতিবেদন দেখার পর আদালত বলেন, রিপোর্টতো ভালো। অস্বাভাবিক কিছু নেই।

প্রতিবেদনটি দেখে ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয় সেখানে মানসিক অবস্থা পরীক্ষার মতো কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন না। তাই এটা পরীক্ষার প্রয়োজন।
 
এ আবেদনের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, শহিদুল আলমকে বেআইনিভাবে রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশের ভিত্তিতে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। তা ওই আদালত খারিজ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এ আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে যাবার কথা। তা না যেয়ে সরাসরি হাইকোর্টে আসতে পারে না। এসব কারণে রিট অপরিপক্ক।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ফেসবুক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং আন্দোলন নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত সৃস্টির অভিযোগ আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

আটকের পর তাকে নির্যাতন ও রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে ০৭ আগস্ট (মঙ্গলবার) হাইকোর্টে রিট করেন তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ।

রিটের শুনানি শেষে রিমান্ডে থাকা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অবিলম্বে হাসপাতালে পাঠাতে নির্দেশ দিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন হাইকোর্ট।
 
ওই আদেশ অনুসারে বুধবার শহিদুল আলমকে হাসপাতালে নেওয়ার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ফের গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।
 
তবে শহিদুল আলমকে হাসপাতালে ভর্তি করার মতো অসুস্থ নন বলে বুধবার জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ-আল-হারুন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৮
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।