আদালত বলেছেন, বিএসটিআই একটি বিশেষ সরকারি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষায় ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য ধরা পড়ল।
আদালত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার আইন আছে। আইনে তাদের সব দেখার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কী করছে?
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (০৯ মে) এমন মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে জানতে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উপপরিচালকের নিচে নয়—এমন পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে আগামী রোববার (১২ মে) আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস)-এর নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বুধবার (০৮ মে) এ রিট করেন।
রিটে বাজার থেকে ৫২টি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য জব্দ বা প্রত্যাহার করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং ওই পণ্য প্রত্যাহার বা জব্দ করতে কেনো নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
খাদ্য ও বাণিজ্য সচিব, বিএসটিআই মহাপরিচালক, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রিটের বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে তারা ওইসব পণ্য প্রত্যাহার ও জব্দ করার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে দুই সচিবসহ ৫ জনের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিশন(বিএসটিআই)-এর পরীক্ষায় ওইসব কোম্পানির ভেজাল ও নিম্নমাণের পণ্য ধরা পড়ে। এরপরও সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়ায় সোমবার ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, বিএসটিআই-এর বরাত দিয়ে ৩ ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে ৫২টি পণ্য নিম্নমানের ও ভেজাল। বিএসটিআই ওই ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করেছে।
এতে আরও বলা হয়, ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ। এর ফলে মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। কিডনি, লিভার আক্রান্ত হতে পারে। কিন্তু অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পণ্যসমূহ জব্দ না করে শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ওইসব নিম্নমানের পণ্য বাজারে বিক্রির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ওইসব পণ্য বাজারে বিক্রিও হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৬ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৯
ইএস/এমএ